রোমীয়: রুকু – ২

214465
Total
Visitors
(২:১) অতএব, তুমি যে-ই হও না কেনো, তুমি যখন অন্যের বিচার করো, তখন তোমার কোনো অজুহাত নেই; কারণ অন্যের বিচারের রায় ঘোষণার মাধ্যমে তুমি নিজেকেই দোষী করে থাকো; তুমি বিচারক, তুমিও একই কাজ করে থাকো। (২) তুমি বলো, “আমরা জানি, যারা এরকম কাজ করে, তাদের ওপর আল্লাহর বিচার সত্য অনুসারেই হয়।”

(৩) তুমি যে-ই হও না কেনো, তুমি কি চিন্তা করে দেখেছো যে, যারা ওইরকম কাজ করে, তুমি যখন তাদের বিচার করো এবং তুমি নিজে ওই একই রকম কাজ করো, তখন তুমি কি আল্লাহর বিচার থেকে রক্ষা পাবে? (৪) অথবা তুমি কি তাঁর মহা-দয়া, ধৈর্য ও সহ্যগুণকে অবজ্ঞা করছো? তুমি কি বুঝতে পারো না যে, আল্লাহর এই দয়া তোমাকে তওবা পর্যন্ত নেবার জন্য? (৫) কিন্তু তুমি তোমার এই কঠিন ও অনুতাপহীন মনের দ্বারা হাশরের দিনে আল্লাহর গজব নিজের জন্য জমা করে রাখছো; হাশরের দিনে আল্লাহর ন্যায়বিচার প্রকাশ পাবে।

(৬) কারণ তিনি তো প্রত্যেককে তার কাজ অনুসারে ফল দেবেন: (৭) যারা ধৈর্য ধরে ভালো কাজ করে, গৌরব, সম্মান ও অমরত্বের সন্ধান করে, তিনি তাদের অনন্ত জীবন দান করবেন; (৮) কিন্তু যারা স্বার্থপর এবং যারা সত্যের অবাধ্য ও মন্দতার বাধ্য, তাদের প্রতি গজব ও প্রচণ্ড ক্রোধ নেমে আসবে।

(৯) যারা গুনাহের কাজ করে তাদের প্রত্যেকের নিদারুণ যন্ত্রণা ও চরম বিপদ হবে- প্রথমে ইহুদিদের এবং পরে অইহুদিদের, (১০) কিন্তু যারা নেক আমল করে, তাদের জন্য রয়েছে গৌরব, সম্মান ও শান্তি- প্রথমে ইহুদিদের ও পরে অইহুদিদেরও। (১১) নিশ্চয়ই আল্লাহ কারো পক্ষপাতীত্ব করেন না।

(১২) শরিয়ত বিহীন অবস্থায় যারা গুনাহ করেছে, শরিয়ত বিহীন অবস্থায় তারা ধ্বংস হবে, আর যারা শরিয়তের অধীনে থেকে গুনাহ করেছে, তাদের বিচার শরিয়ত মতেই হবে। (১৩) কারণ শরিয়তের কথা শুনে কেউ আল্লাহর চোখে ধার্মিক হয় না, বরং যারা শরিয়ত পালন করে, তারাই ধার্মিক বলে বিবেচিত হবে।

(১৪) কারণ যে-অইহুদিরা শরিয়ত পায়নি, তারা যখন সহজাতভাবে শরিয়ত অনুসারে কাজ করে, তখন শরিয়ত না পাওয়া সত্ত্বেও, তারা নিজেরাই নিজেদের শরিয়ত হয়ে ওঠে। (১৫) তারা দেখায় যে, শরিয়ত যা চায় তা তাদের অন্তরে লেখা রয়েছে, তাদের বিবেকও সেই একই সাক্ষ্য দেয়; এবং তাদের পরস্পর বিরোধী ভাবনা, হয় তাদেরকে দোষী করে, না হয় তাদেরকে সমর্থন করে।

(১৬) সেইদিন, আমার প্রচারিত সুখবর অনুসারে, আল্লাহ হযরত ইসা মসিহের মাধ্যমে, সকলের মনের গোপন বিষয়ের বিচার করবেন। (১৭) তুমি যদি নিজেকে ইহুদি বলে জানো এবং শরিয়তের ওপর ভরসা করো এবং আল্লাহর সাথে তোমার সম্পর্কের জন্য গর্ববোধ করো (১৮) এবং তাঁর ইচ্ছা কী তা জানো, আর শরিয়তি শিক্ষায় শিক্ষাপ্রাপ্ত হয়েছো বলে কোনটি উত্তম তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারো, (১৯) আর তুমি যদি নিশ্চিত হও যে, তুমি অন্ধদের পথপ্রদর্শক, যারা অন্ধকারে আছে তাদের জন্য আলো, (২০) বোকাদের সংশোধনকারী, শিশুদের শিক্ষক, শরিয়তের মাঝে সত্য ও জ্ঞানের সঠিক পরিচয় পেয়েছো, (২১) তাহলে তুমি যে অন্যকে শিক্ষা দিচ্ছো, তুমি কি নিজেকে শিক্ষা দেবে না? তুমি যখন চুরি না করার শিক্ষা দাও, তখন তুমি কি চুরি করো?

(২২) তুমি বলছো, জিনা করো না, তুমি কি জিনা করো? তুমি তো মূর্তি ঘৃণা করো, তুমি কি মন্দির লুট করো? (২৩) তুমি যে শরিয়ত নিয়ে গর্ববোধ করছো, তুমি কি শরিয়ত অমান্য করে আল্লাহকে অসম্মান করো? (২৪) কারণ একথা লেখা আছে, “তোমাদেরই কারণে অইহুদিদের মধ্যে আল্লাহর নামের নিন্দা হচ্ছে।” 

(২৫) তুমি যদি শরিয়ত পালন করো, তাহলে খত্‌না করানোতে লাভ আছে; কিন্তু যদি শরিয়ত অমান্য করো, তাহলে তোমার খত্‌না করানো হলেও তুমি তো খত্‌না বিহীনের মতো হয়ে আছো। (২৬) সুতরাং, খত্‌না বিহীন লোকেরা যদি শরিয়তের নিয়ম-কানুন পালন করে, তাহলে তাদের খত্‌না না করানোটা কি খত্‌না হিসাবে ধরা হবে না?

(২৭) কাজেই যারা শারীরিকভাবে খত্‌না বিহীন কিন্তু শরিয়ত পালন করে, তারা তোমার শরিয়ত অমান্য করার বিচার করবে, যদিও তোমার কাছে নিয়ম-নীতির লিখিত কিতাব আছে ও তোমার খত্‌না করানো হয়েছে? (২৮) কেননা বাহ্যিক ইহুদি আসল ইহুদি নয়, সেভাবে বাইরের খত্‌না আসল খত্‌না নয়। (২৯) বরং অন্তরে যে ইহুদি, সে-ই আসল ইহুদি, এবং আসল খত্‌না হচ্ছে অন্তরের বিষয়-এটি রুহানি ব্যাপার, আক্ষরিক নয়। এরকম মানুষ অন্যদের কাছ থেকে নয় বরং আল্লাহর কাছ থেকে প্রশংসা পায়।
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
রোমীয়: রুকু - ১

রোমীয়: রুকু – ১

১:১ আমি পৌল, হযরত ইসা মসিহের গোলাম, হাওয়ারি হওয়ার জন্য আমাকে ডাকা হয়েছে। আল্লাহর সুখবর প্রচারের জন্য আমাকে আলাদা করা ...
রোমীয়: রুকু - ২

রোমীয়: রুকু – ২

(২:১) অতএব, তুমি যে-ই হও না কেনো, তুমি যখন অন্যের বিচার করো, তখন তোমার কোনো অজুহাত নেই; কারণ অন্যের বিচারের ...
রোমীয়: রুকু - ৩

রোমীয়: রুকু – ৩

(৩:১) তাহলে একজন ইহুদির কি সুবিধা আছে? বা খত্‌না করানোর কি মূল্য আছে? (২) সবদিক দিয়েই অনেক লাভ আছে। প্রথমত ...
রোমীয়: রুকু - ৪

রোমীয়: রুকু – ৪

(৪:১) তাহলে দৈহিক সম্পর্কের দিক থেকে আমাদের পূর্বপুরুষ হযরত ইব্রাহিম আ. সম্বন্ধে আমরা কী বলবো? তিনি কী পেয়েছিলেন? (২) হযরত ...
রোমীয়: রুকু - ৫

রোমীয়: রুকু – ৫

(১) অতএব, ইমানের দ্বারা ধার্মিক বলে গণ্য হওয়ায়, আমাদের নেতা হযরত ইসা মসিহের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে আমাদের শান্তি আছে, (২) ...
রোমীয়: রুকু - ৬

রোমীয়: রুকু – ৬

(৬:১) তাহলে আমরা কী বলবো? অনুগ্রহ যাতে উপচে পড়ে সেজন্য আমরা কি গুনাহ করতেই থাকবো? (২) কখনোই না! আমরা যারা ...
রোমীয়: রুকু - ৭

রোমীয়: রুকু – ৭

(৭:১) প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা কি জানো না, কারণ আমি তাদের সাথে কথা বলছি, যারা শরিয়ত জানে একজন মানুষ ...
রোমীয়: রুকু - ৮

রোমীয়: রুকু – ৮

(৮:১) অতএব, যারা মসিহ ইসাকে গ্রহণ করেছে, তাদের ওপর আর কোনো শাস্তি নেই। (২) কারণ হযরত ইসা মসিহের জীবন দায়ী ...
রোমীয়: রুকু - ৯

রোমীয়: রুকু – ৯

(১) মসিহের সাথে যুক্ত থেকে আমি সত্য বলছি- আমি মিথ্যা বলছি না; আল্লাহর রুহের দ্বারা আমার বিবেক নিশ্চিত করছে যে- ...
রোমীয়: রুকু - ১০

রোমীয়: রুকু – ১০

(১) ভাই ও বোনেরা, তাদের জন্য আমার অন্তরের আকাঙ্ক্ষা ও আল্লাহর কাছে মোনাজাত এই যে, তারা যেনো নাজাত পায়।২) তাদের ...
রোমীয়: রুকু - ১১

রোমীয়: রুকু – ১১

(১) তাহলে আমার প্রশ্ন, আল্লাহ কি তাঁর লোকদেরকে পরিত্যাগ করেছেন? কখনোই না! আমি নিজে একজন ইস্রাইলীয়, হযরত ইব্রাহিম আ.র বংশধর, ...
রোমীয়: রুকু - ১২

রোমীয়: রুকু – ১২

(১) সুতরাং, ভাই ও বোনেরা, আল্লাহর অপার অনুগ্রহের জন্য, আমি তোমাদেরকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, তোমরা তোমাদের শরীরকে আল্লাহর কাছে কবুল ...
রোমীয়: রুকু - ১৩

রোমীয়: রুকু – ১৩

(১৩:১) প্রত্যেক ব্যাক্তি শাসনকর্তাদের অধীনতা মেনে চলুক; কারণ এমন কোনো কর্তৃত্ব নেই, যা আল্লাহর কাছ থেকে আসে না, এবং প্রচলিত ...
রোমীয়: রুকু - ১৪

রোমীয়: রুকু – ১৪

(১৪:১) যাদের ইমান দুর্বল, তাদেরকে সাদরে গ্রহণ করো, কিন্তু অভিমত বা মতবাদ নিয়ে ঝগড়া করার জন্য নয়। (২) কেউ কেউ ...
রোমীয়: রুকু - ১৫

রোমীয়: রুকু – ১৫

(১) আমরা যারা সবল, আমাদের উচিত নিজেদের সন্তুষ্ট না করে বরং দুর্বলদের দুর্বলতাগুলো সহ্য করা। (২) আমাদের প্রত্যেকের উচিত আমাদেও ...
রোমীয়: রুকু - ১৬

রোমীয়: রুকু – ১৬

(১) আমি তোমাদের কাছে আমাদের বোন ফৈবির প্রশংসা করছি, তিনি কিংক্রিয়ার ইমানদার দলের একজন খাদেম, (২) তাই আল্লাহর দরবেশদের যেভাবে ...