১পরে তিনি চেয়ে দেখলেন, ধনী লোকেরা বায়তুল-মোকাদ্দসের দানবাক্সে তাদের দান রাখছে। ২তিনি এও দেখলেন যে, এক গরিব বিধবা ছোট্ট দুটো তামার পয়সা রাখলো। ৩তিনি বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এই গরিব বিধবা অন্য সকলের চেয়ে অনেক বেশি দান করেছে।
৪কারণ খরচ করার পরে যা বাকি ছিলো, তাদের সকলে তা থেকে দান করেছে কিন্তু এই মহিলার অভাব সত্ত্বেও বেঁচে থাকার জন্য তার যা ছিলো, তার সবই সে দান করেছে।”
৫সাহাবিদের মধ্যে কয়েকজন বায়তুল-মোকাদ্দসের বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। তারা বলছিলেন, সুন্দর সুন্দর পাথর ও আল্লাহর নামে উৎসর্গ করা দান কেমন সাজানো হয়েছে। ৬তিনি বললেন, “তোমরা যে এসব দেখছো, এমন দিন আসবে, যখন এর একটি পাথরের ওপরে আরেকটি পাথর থাকবে না, সবই ভেঙে ফেলা হবে।” ৭তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “হুজুর, কখন এসব ঘটবে এবং এসব ঘটার সময়ের চিহ্নই বা কী?”
৮তিনি বললেন, “সাবধান, কেউ যেনো তোমাদের না ঠকায়। কারণ অনেকে আমার নাম নিয়ে এসে বলবে, ‘আমিই মসিহ!’ এবং ‘সময় কাছে এসে গেছে!’ তাদের পেছনে যেয়ো না। ৯তোমরা যখন যুদ্ধের ও বিদ্রোহের খবর শুনবে, তখন ভয় পেয়ো না। কারণ প্রথমে এসব ঘটতেই হবে কিন্তু তখনই শেষ নয়।”
১০তারপর তিনি তাদের বললেন, “এক জাতি আরেক জাতির বিরুদ্ধে, এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। ১১ভীষণ ভীষণ ভূমিকম্প হবে এবং নানা জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও মহামারী হবে; আসমান থেকে নানা ভয়ঙ্কর লক্ষণ এবং মহৎ চিহ্ন দেখা যাবে। ১২এসব ঘটার আগেই লোকেরা তোমাদের ধরবে এবং তোমাদের ওপরে অত্যাচার করবে। বিচারের জন্য তারা তোমাদের সিনাগোগে নিয়ে যাবে ও জেলখানায় দেবে এবং আমার নামের জন্য বাদশাদের ও গভর্নরদের সামনে তোমাদের নেয়া হবে। ১৩সাক্ষ্য দেবার জন্য এটি তোমাদের সুযোগ করে দেবে। ১৪অতএব, কী বলতে হবে সে-বিষয়ে আগেভাগে চিন্তা না করার জন্য মন স্থির করো। ১৫কারণ আমি তোমাদের এমন কথা ও জ্ঞান দেবো যে, তোমাদের বিপক্ষরা জবাব দিতে পারবে না বা তোমাদের থামাতে পারবে না।
১৬তোমাদের বাবামা, ভাইবন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনরা তোমাদের ধরিয়ে দেবে। তোমাদের কাউকে কাউকে তারা হত্যা করবে। ১৭আমার নামের জন্য সবাই তোমাদের ঘৃণা করবে ১৮কিন্তু তোমাদের মাথার একটি চুলও নষ্ট হবে না। ১৯ধৈর্য ধরে স্থির থাকলে তোমাদের জীবন রক্ষা পাবে।
২০তোমরা যখন দেখবে সৈন্যরা জেরুসালেমকে ঘেরাও করেছে, তখন বুঝবে যে, এর সর্বনাশ, জনমানবহীন স্থান ও ধ্বংস হওয়ার সময়, কাছে এসে গেছে। ২১সেই সময় যারা ইহুদিয়াতে থাকবে, তারা পাহাড়ি এলাকায় পালিয়ে যাক। যারা শহরের ভেতরে থাকবে, তারা বাইরে চলে যাক। যারা গ্রামের দিকে থাকবে, তারা শহরে না ঢুকুক। ২২কারণ ওই দিনগুলো প্রতিশোধের দিন; যা লেখা আছে তা পূর্ণ হবার দিন। ২৩ওই দিনগুলোতে যারা গর্ভবতী আর যারা সন্তানকে দুধ খাওয়ায়, দুর্ভাগী তারা! কারণ ওই সময় দুনিয়াতে ভীষণ কষ্ট ও এই জাতির ওপরে আল্লাহর গযব নেমে আসবে। ২৪তরবারি দিয়ে তাদের হত্যা করা হবে এবং যারা বেচে থাকবে তাদেরকে সমস্ত জাতির মধ্যে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হবে! যতোদিন না জাতিদের সময় পূর্ণ হয়, ততোদিন তারা জেরুসালেমকে পায়ে মাড়াবে।
২৫সূর্য, চাঁদ ও তারাগুলোর মধ্যে অনেক চিহ্ন দেখা দেবে। দুনিয়াতে সমস্ত জাতি ভীষণ কষ্ট পাবে এবং সমুদ্রের গর্জন ও ঢেউয়ের জন্য তারা বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত হবে। ২৬দুনিয়ার ওপর কী ঘটতে যাচ্ছে, তার ভয়ে লোকেরা অজ্ঞান হয়ে যাবে, কারণ সৌরজগত দুলতে থাকবে। ২৭অতঃপর তারা ইবনুল-ইনসানকে ক্ষমতা ও মহাগৌরবে মেঘের মধ্যে আসতে দেখবে। ২৮এসব ঘটনা যখন ঘটতে শুরু করবে, তখন তোমরা সোজা হয়ে ও মাথা তুলে দাঁড়াবে, কারণ তোমাদের মুক্তির সময় কাছে এসেছে।”
২৯তারপর তিনি তাদের একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, “ডুমুরগাছ ও অন্যান্য গাছকে লক্ষ্য করো। ৩০নতুন পাতা বের হতে দেখলে তোমরা নিজেরাই বুঝতে পারো যে, গরমকাল কাছে এসেছে। ৩১সেভাবে যখন তোমরা এসব ঘটতে দেখবে, তখন বুঝবে যে, আল্লাহর রাজ্য কাছে এসে গেছে। ৩২আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, সবকিছু না ঘটা পর্যন্ত এ-কালের লোকেরা শেষ হবে না। ৩৩আসমান ও জমিন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আমার কালাম কখনো শেষ হবে না।
৩৪তোমরা সাবধান থেকো, যেনো তোমাদের মন ভোগবিলাসে, মাতলামিতে ও সংসারের চিন্তার ভারে নুয়ে না পড়ে। তা না হলে ফাঁদের মতো হঠাৎ সেই দিনটি তোমাদের ওপরে এসে পড়বে। ৩৫কারণ সেই দিনটি সমস্ত দুনিয়ার মানুষের ওপরে আসবে।
৩৬সব সময় সজাগ থেকো এবং মোনাজাত করো, যেনো যা-কিছু ঘটবে তা এড়িয়ে যাবার শক্তি এবং ইবনুল-ইনসানের সামনে দাঁড়াবার শক্তি পাও।”
৩৭প্রতিদিনই তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসে শিক্ষা দিতেন এবং রাতের বেলা বাইরে গিয়ে জৈতুন নামের পাহাড়ে থাকতেন। ৩৮সমস্ত লোক খুব ভোরে উঠে তাঁর কথা শোনার জন্য বায়তুল-মোকাদ্দসে যেতো।
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১
১,২মাননীয় থিয়ফিল, আমাদের মধ্যে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা যারা প্রথম থেকে নিজের চোখে দেখেছেন ও আল্লাহর কালাম প্রচার করেছেন, তারা ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ২
১সেই সময় আগস্ত কাইসার তার গোটা সাম্রাজ্যে আদম-শুমারির হুকুম দিলেন। ২সিরিয়ার গভর্নর কুরিনিয়ের সময় এই প্রথমবারের মতো আদম-শুমারি হয়। ৩নাম ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ৩
১সম্রাট টাইবেরিয়াসের রাজত্বের পনের বছরের সময় পন্তিয়াস পিলাত যখন ইহুদিয়া প্রদেশের গভর্নর, হেরোদ গালিল প্রদেশ এবং তার ভাই ফিলিপ ইতুরিয়া ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ৪
১হযরত ইসা আ. আল্লাহর রুহে পূর্ণ হয়ে জর্দান থেকে ফিরে এলেন এবং সেই রুহের পরিচালনায় তাঁকে মরু প্রান্তরে যেতে হলো। ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ৫
১এক সময় হযরত ইসা আ. গিনেসরত লেকের পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং লোকেরা আল্লাহর কালাম শোনার জন্য তাঁর চারপাশে ভিড় করে ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ৬
১কোনো এক সাব্বাতে হযরত ইসা আ. ফসলের মাঠ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর হাওয়ারিরা শিষ ছিঁড়ে হাতে ঘষে ঘষে খেতে লাগলেন।২এতে কয়েকজন ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ৭
১তিনি লোকদের কাছে তাঁর সব কথা শেষ করে কফরনাহুমে চলে গেলেন। ২সেখানে একজন শত-সৈন্যের সেনাপতির এক গোলাম ছিলো, যে তার ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ৮
১এরপরই তিনি গ্রামে গ্রামে ও শহরে শহরে ঘুরে আল্লাহর রাজ্যের সুখবর প্রচার করতে লাগলেন। তাঁর সাথে সেই বারোজনও ছিলেন। ২কয়েকজন ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ৯
১অতঃপর তিনি সেই বারোজনকে একত্রে ডাকলেন এবং তাদেরকে সমস্ত ভূতের ওপরে ক্ষমতা ও অধিকার এবং রোগ ভালো করার ক্ষমতাও দিলেন। ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১০
১অতঃপর মসিহ আরো সত্তরজনকে মনোনীত করলেন। তিনি নিজে যে যে গ্রামে ও যে যে জায়গায় যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন, সেসব ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১১
১তিনি কোনো এক জায়গায় মোনাজাত করছিলেন। মোনাজাত শেষ হলে তাঁর কোনো এক হাওয়ারি তাঁকে বললেন, “হুজুর, হযরত ইয়াহিয়া আ. যেভাবে ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১২
১এর মধ্যে হাজার হাজার লোক এমনভাবে জড়ো হলো যে, তারা ঠেলাঠেলি করে একে অন্যের ওপর পড়তে লাগলো। তিনি প্রথমে তাঁর ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১৩
১ঠিক ওই সময় যারা উপস্থিত ছিলো, তারা হযরত ইসা আ.কে বললো, গালিলের কিছু লোক যখন কোরবানি করছিলো, তখন তাদেরকে হত্যা ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১৪
১এক সাব্বাতে হযরত ইসা আ. ফরিসিদের এক নেতার বাড়িতে খেতে গেলেন। তারা গভীরভাবে তাঁকে লক্ষ্য করছিলেন। ২ঠিক ওই সময় তাঁর ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু ১৫
১সমস্ত কর-আদায়কারী ও গুনাহগাররা যখন তাঁর কথা শোনার জন্য তাঁর কাছে আসছিলো, ২তখন ফরিসিরা ও আলিমরা বিরক্তি প্রকাশ করে বলতে ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১৬
১অতঃপর তিনি সাহাবিদেরকে বললেন, “কোনো এক ধনী লোকের ম্যানেজারকে এই বলে দোষ দেয়া হলো যে, সে তার মালিকের ধন-সম্পত্তি নষ্ট ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১৭
১হযরত ইসা আ. তাঁর সাহাবিদের বললেন, “বাধা অবশ্যই আসবে কিন্তু দুর্ভাগ্য সেই লোকের, যার মধ্য দিয়ে বাধা আসে! ২কেউ যদি ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১৮
১মোনাজাতের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে হযরত ইসা আ. তাদেরকে একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, যেনো তারা সব সময় মোনাজাত করেন এবং নিরাশ না হোন। ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ১৯
১তিনি জিরিহোতে এসে শহরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। ২সেখানে সক্কেয় নামে এক লোক ছিলেন। তিনি প্রধান কর-আদায়কারী এবং ধনী ছিলেন। ৩হযরত ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ২০
১একদিন তিনি যখন বায়তুল-মোকাদ্দসে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং ইঞ্জিল প্রচার করছিলেন, তখন বুজুর্গদের সাথে প্রধান ইমামেরা ও আলিমরা এলেন। ২তারা ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ২১
১পরে তিনি চেয়ে দেখলেন, ধনী লোকেরা বায়তুল-মোকাদ্দসের দানবাক্সে তাদের দান রাখছে। ২তিনি এও দেখলেন যে, এক গরিব বিধবা ছোট্ট দুটো ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ২২
১সেই সময় ইদুল-মাত্ছ কাছে এসে গিয়েছিলো। এটিকে ইদুল-ফেসাখও বলা হয়। ২প্রধান ইমামেরা ও আলিমরা তাঁকে হত্যা করার পথ খুঁজছিলেন, কারণ ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ২৩
১তখন মহাসভার সবাই উঠে হযরত ইসা আ.কে পিলাতের কাছে নিয়ে গেলেন। ২তারা এই বলে তাঁর বিরুদ্ধে দোষ দিতে লাগলেন, “আমরা ...
ইবনুল-ইনসান: রুকু – ২৪
১কিন্তু সপ্তাহের প্রথম দিন খুব সকালে সেই মহিলারা তাদের তৈরি করা সুগন্ধি মসলা নিয়ে কবরের কাছে গেলেন। ২তারা দেখলেন, কবরের ...