১আমি এসব কথা তোমাদের জানাচ্ছি, যেনো তোমরা বাধা না পাও। ২তারা তোমাদেরকে সিনাগোগ থেকে বের করে দেবে। প্রকৃতপক্ষে এমন এক সময় আসবে, যখন তোমাদের হত্যাকারীরা মনে করবে যে, এভাবে তারা আল্লাহর এবাদত করছে। ৩আর তারা এসব করবে, কারণ তারা প্রতিপালককে বা আমাকে জানে না। ৪কিন্তু আমি তোমাদের এসব বলছি, যেনো তাদের সময় যখন আসবে, তখন তোমরা স্মরণ করতে পারো যে, আমি তাদের বিষয়ে তোমাদের বলেছি। এর আগে এসব তোমাদের বলিনি, কারণ আমি তোমাদের সাথে ছিলাম।
৫যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, এখন আমি তাঁর কাছে যাচ্ছি, অথচ তোমরা কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করছো না, ‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’ ৬আমি এসব কথা বলায় দুঃখে তোমাদের মন ভরে গেছে।
৭তথাপি আমি তোমাদের সত্যিই বলছি- আমার যাওয়া তোমাদের জন্য ভালো, কারণ আমি না গেলে সেই সাহায্যকারী তোমাদের কাছে আসবেন না; আমি গিয়ে তাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবো।
৮তিনি যখন আসবেন, তখন তিনি গুনাহ, ধার্মিকতা এবং বিচারের বিষয়ে এই দুনিয়া যে দোষী তা প্রমাণ করবেন। ৯গুনাহর বিষয়ে, কারণ তারা আমার ওপর ইমান আনেনি। ১০ধার্মিকতার বিষয়ে, কারণ আমি প্রতিপালকের কাছে যাচ্ছি এবং তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না। ১১বিচার সম্পর্কে, কারণ এই দুনিয়ার কর্তার বিচার হয়ে গেছে।
১২আমার আরো অনেককিছু তোমাদের বলার আছে কিন্তু তোমরা তা এখন সহ্য করতে পারবে না। ১৩যখন সত্যের রুহ আসবেন, তখন তিনি তোমাদের সমস্ত সত্যে পরিচালনা করবেন; তিনি নিজ থেকে কিছুই বলবেন না কিন্তু তিনি যা শোনেন, তাই বলবেন এবং আগামীতে যা যা ঘটবে তাও তোমাদের জানাবেন।
১৪তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন, কারণ আমার যা আছে তা-ই তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন। ১৫প্রতিপালকের যা আছে তার সবই আমার; এ-কারণেই আমি বলছি যে, আমার যা আছে তা তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন। ১৬আর অল্প কিছু সময়, তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না এবং আবার কিছুদিন পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে।”
১৭তাঁর কয়েকজন হাওয়ারি একে অন্যকে বললেন, “তিনি একথা বলে কী বোঝাতে চাইলেন যে, ‘আর অল্প কিছু সময়, তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না এবং আবার কিছুদিন পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে’ এবং ‘কারণ আমি প্রতিপালকের কাছে যাচ্ছি?’” ১৮তারা বললেন, “‘আর অল্প কিছু সময়’ বলে তিনি কী বোঝাতে চাইলেন? তিনি কোন বিষয়ে কথা বলছেন তা আমরা বুঝি না।” ১৯হযরত ইসা আ. জানতেন যে, তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করতে চাচ্ছেন। তাই তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছো যে, ‘আর অল্প কিছু সময়, তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না এবং আবার কিছুদিন পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে’ বলে আমি কী বোঝাতে চাচ্ছি?”
২০সত্যিই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা কাঁদবে ও বিলাপ করবে কিন্তু দুনিয়া আনন্দ করবে। তোমাদের কষ্ট হবে কিন্তু তোমাদের কষ্ট আনন্দে পরিণত হবে।
২১সন্তান জন্ম দেবার সময় মহিলারা প্রসববেদনায় কষ্ট পায়, কারণ তার প্রসবের সময় এসেছে। কিন্তু সন্তান জন্মের পর নতুন মানুষ দুনিয়াতে আনার আনন্দে তার আর প্রসববেদনার কথা মনে থাকে না। ২২সেই ভাবে এখন তোমাদের কষ্ট আছে কিন্তু আমি আবার তোমাদের দেখবো এবং তোমাদের অন্তর আনন্দে পূর্ণ হবে; তোমাদের আনন্দ কেউই তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না।
২৩সেদিন তোমরা আমার কাছে কিছুই চাবে না। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যদি তোমরা আমার নামে প্রতিপালকের কাছে কিছু চাও, তাহলে তিনি তোমাদের তা দেবেন। ২৪এখনো পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছুই চাওনি। চাও, তাহলে তোমরা পাবে, যেনো তোমাদের আনন্দ পূর্ণ হয়।
২৫আমি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তোমাদের এসব কথা বললাম। সময় আসছে, যখন আমি আর দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলবো না কিন্তু সহজভাবে প্রতিপালকের কথা বলবো। ২৬সেদিন তোমরা আমার নামে চাবে। আমি তোমাদের বলি না যে, আমি তোমাদের পক্ষে প্রতিপালকের কাছে চাবো। ২৭প্রতিপালক নিজেই তোমাদের মহব্বত করেন, কারণ তোমরা আমাকে মহব্বত করেছো এবং ইমান এনেছো যে, আমি আল্লাহর কাছ থেকে এসেছি। ২৮আমি প্রতিপালকের কাছ থেকে দুনিয়াতে এসেছি এবং আবার আমি দুনিয়া ছেড়ে প্রতিপালকের কাছে যাচ্ছি।”
২৯তাঁর হাওয়ারিরা বললেন, “হ্যাঁ, এখন আপনি সরাসরি কথা বলছেন, কোনো দৃষ্টান্ত ব্যবহার করছেন না! ৩০এখন আমরা জানি যে, আপনি সবই জানেন, আপনাকে আর কারো কোনো প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই; এভাবেই আমরা জানি যে, আপনি আল্লাহর কাছ থেকে এসেছেন।
৩১হযরত ইসা আ. উত্তর দিলেন, “এখন কি তোমরা ইমান এনেছো? ৩২সময় আসছে, এমনকি তা এসে গেছে, যখন তোমরা সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যাবে, প্রত্যেকে নিজের বাড়িতে যাবে এবং তোমরা আমাকে একা ফেলে যাবে। তবুও আমি একা নই, কারণ আমার প্রতিপালক আমার সাথে আছেন।
৩৩আমি তোমাদের এসব বললাম, যেনো তোমরা আমার মধ্যে শান্তি পাও। এই দুনিয়ায় তোমরা অত্যাচারিত হবে কিন্তু সাহস রাখো, আমি দুনিয়াকে পরাজিত করেছি!”
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১
১-৫শুরু থেকেই আল্লাহ আছেন। আল্লাহর কালাম তাঁর নিজের মধ্যেই ছিলো, এই কালামই হলো আল্লাহর কথা। আল্লাহ্ তাঁর কথা দ্বারাই সব ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ২
১তৃতীয় দিনে গালিলের কান্না গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান ছিলো এবং হযরত ইসা আ.র মা সেখানে ছিলেন। ২হযরত ইসা আ. এবং ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৩
১নিকদিম নামে একজন ফরিসি ছিলেন; তিনি ছিলেন ইহুদিদের একজন নেতা। ২তিনি রাতের বেলায় হযরত ইসা আ.র কাছে এলেন এবং বললেন, ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৪
১যখন হযরত ইসা আ. বুঝতে পারলেন যে, ফরিসিরা শুনতে পেয়েছেন, “ হযরত ইসা আ. হযরত ইয়াহিয়া আ.র থেকে বেশি উম্মত ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৫
১এরপর ইহুদিদের আরেকটি ইদের সময় হলো এবং হযরত ইসা আ. জেরুসালেমে গেলেন। ২জেরুসালেমের মেষ-দরজার কাছে একটি পুকুর ছিলো। ৩হিব্রু ভাষায় ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৬
১অতঃপর হযরত ইসা আ. গালিল লেকের ওপারে গেলেন। একে তিবিরিয়া লেকও বলা হয়। ২বিশাল এক জনতা তাঁর পেছনে পেছনে যাচ্ছিলো, ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৭
১এরপর হযরত ইসা আ. গালিলে চলাফেরা করছিলেন। তিনি ইহুদিয়ায় যেতে চাইলেন না, কারণ ইহুদিরা তাঁকে হত্যা করার সুযোগ খুঁজছিলো। ২এই ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৮
১অতঃপর তারা প্রত্যেকে বাড়ি চলে গেলেন। এদিকে হযরত ইসা আ.ও জৈতুন পাহাড়ে চলে গেলেন। ২এবং খুব ভোরে উঠে তিনি আবার ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৯
১যেতে যেতে তিনি এক জন্মান্ধকে দেখতে পেলেন। ২তাঁর সাহাবিরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “হুজুর, কার গুনাহর কারণে এই লোকটি অন্ধ হয়ে ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১০
১আমি তোমাদের সত্যি সত্যিই বলছি, যে কেউ দরজা দিয়ে না ঢুকে অন্য উপায়ে ভেড়ার খোঁয়াড়ে ঢোকে, সে চোর ও ডাকাত। ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১১
১বেথানিয়া গ্রামের লাসার নামে এক লোকের অসুখ হয়েছিলো। মরিয়ম ও তার বোন মার্থা সেই একই গ্রামে থাকতেন। ২ইনি সেই মরিয়ম, ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১২
১ইদুল-ফেসাখের ছয়দিন আগে হযরত ইসা আ. বেথানিয়ায় লাসারের বাড়িতে এলেন। এই লাসারকেই তিনি মৃত থেকে জীবিত করে তুলেছিলেন। ২সেখানে তারা ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৩
১ইদুল-ফেসাখের আগে হযরত ইসা আ. বুঝতে পারলেন যে, তাঁর এই দুনিয়া ছেড়ে প্রতিপালকের কাছে চলে যাবার সময় হয়ে গেছে। এই ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৪
১তোমরা অন্তরে অস্থির হয়ো না। আল্লাহর ওপর ইমান রাখো, আমার ওপরও ইমান রাখো। ২আমার প্রতিপালকের কাছে থাকার অনেক জায়গা আছে। ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৫
১আমি প্রকৃত আঙুরগাছ এবং আমার প্রতিপালক চাষী। ২আমার যেসব ডালে ফল ধরে না, সেগুলো তিনি কেটে ফেলেন আর যেসব ডালে ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৬
১আমি এসব কথা তোমাদের জানাচ্ছি, যেনো তোমরা বাধা না পাও। ২তারা তোমাদেরকে সিনাগোগ থেকে বের করে দেবে। প্রকৃতপক্ষে এমন এক ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৭
১এসব কথা বলার পর হযরত ইসা আ. আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, “হে আমার প্রতিপালক, সময় এসেছে, তোমার একান্ত প্রিয় মনোনীতজনকে ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৮
১এসব কথা বলার পর হযরত ইসা আ. তাঁর হাওয়ারিদের নিয়ে কিদরোন উপত্যকা পার হয়ে একটি জায়গায় গেলেন। সেখানে একটি বাগান ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৯
১অতঃপর পিলাত হযরত ইসা আ.কে চাবুক মারালেন। ২আর সৈন্যরা কাঁটালতা দিয়ে মুকুট বানিয়ে তাঁর মাথায় পরালো এবং তাঁকে একটি বেগুনি ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ২০
১সপ্তাহের প্রথম দিন খুব ভোরে অন্ধকার থাকতে মগ্দলিনি মরিয়ম কবরের কাছে এলেন এবং দেখলেন যে, কবরের মুখ থেকে পাথরটি সরিয়ে ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ২১
১এসবের পরে তিবিরিয়া লেকের পাড়ে হযরত ইসা আ. আবার তাঁর হাওয়ারিদের দেখা দিলেন। তিনি নিজেকে তাদের কাছে এভাবে দেখালেন: ২হযরত ...