১পাঁচদিন পরে মহাইমাম অননিয় কয়েকজন ইহুদি বুজুর্গকে ও তর্তুল্লস নামে একজন উকিলকে নিয়ে সেখানে এলেন এবং গভর্নরের কাছে হযরত পৌল রা.-এর বিরুদ্ধে নালিস জানালেন।
২-৩হযরত পৌল রা.-কে ডেকে আনার পর তর্তুল্লস এই বলে তাকে দোষারোপ করতে লাগলেন, “হে মাননীয় ফিলিক্স, আপনার অধীনে আমরা অনেকদিন ধরে খুব শান্তিতে আছি। আপনি আপনার দূর দৃষ্টির দ্বারা এই জাতির অনেক উন্নতি করেছেন। আমরা সব সময় সব জায়গায় কৃতজ্ঞতার সংগে তা স্মরণ করি।
৪কিন্তু আপনার সময় নষ্ট না-করার জন্য আমি এই অনুরোধ করি, দয়া করে আমাদের কথা শুনুন। আমরা অল্প কথায় সব বলবো।
৫আমরা দেখেছি, এই লোকটা একটা আপদ। সব সময় গোলমালের সৃষ্টি করে থাকে। সারা দুনিয়ায় ইহুদিদের মধ্যে সে গোলমাল বাধিয়ে বেড়ায়। সে নাসারা (নাজারিন বা নাজারিনিস) নামে একটি ধর্মীয় উপদলের নেতা। ৬,৭এমনকি বায়তুল-মোকাদ্দস পর্যন্ত সে নাপাক করার চেষ্টা করেছে এবং আমরা তাকে ধরেছি। ৮আমরা তাকে যে-সব দোষ দিচ্ছি, আপনি নিজে তাকে জেরা করলে সবকিছুই জানতে পারবেন।” ৯এসব কথা যে সত্যি, তাতে ইহুদিরাও সায় দিলো।
১০তখন গভর্নর তাকে ইসারা করার পর হযরত পৌল রা বলতে লাগলেন- “আমি খুব খুশি হয়েই নিজের পক্ষে কথা বলছি। আমি জানি যে, বেশ কয়েক বছর ধরে আপনি এই জাতির বিচার করে আসছেন। ১১আপনি খোঁজ নিলে সহজেই জানতে পারবেন যে, আজ বারো দিনের বেশি হয়নি আমি এবাদত করার জন্য জেরুসালেমে গিয়েছিলাম।
১২তারা আমাকে বায়তুল-মোকাদ্দসে কারো সংগে তর্কাতর্কি করতে দেখেননি বা সিনাগোগে কিংবা শহরের অন্য কোথাও লোকদের উসকানি দিতে দেখেননি। ১৩আমার বিরুদ্ধে এখন তারা যে-দোষ দেখাচ্ছেন, তার প্রমাণ তারা আপনার কাছে দিতে পারবেন না। ১৪কিন্তু এ-কথা আমি আপনার কাছে স্বীকার করছি, যে-পথকে তারা ধর্মীয় উপদল বলছেন, আমি সেই পথেই আমার পূর্বপুরুষদের আল্লাহর এবাদত করে থাকি। তওরাতের সংগে যা-কিছুর মিল আছে, তাতে এবং নবিদের কিতাবে আমি ইমান রাখি।
১৫তারা যেমন আশা করেন, তেমনি আমারও আল্লাহর ওপর এই আশা আছে যে, ধার্মিক এবং অধার্মিক সকলেরই পুনরুত্থান হবে। ১৬এ-জন্য আমি আল্লাহ্ ও মানুষের কাছে সব সময় আমার বিবেককে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি। ১৭অনেক বছর পর আমি আমার জাতির গরিব লোকদের দান-খয়রাত করতে ও কোরবানি দিতে গিয়েছিলাম।
১৮নিজেকে পাকসাফ করার পর যখন আমি সেই কাজ করছিলাম, তখনই তারা আমাকে বায়তুল-মোকাদ্দসে দেখতে পেয়েছিলেন। আমার কাছে লোকজনের ভিড়ও ছিলো না কিংবা আমাকে নিয়ে কোনো গোলমালও হয়নি। ১৯কিন্তু এশিয়ার কয়েকজন ইহুদি সেখানে ছিলো। যদি আমার বিরুদ্ধে তাদের কিছু বলার থাকে, তাহলে তাদেরই আপনার কাছে আসা উচিত ছিলো। ২০কিংবা এখানে যারা উপস্থিত আছেন তারা ইবলুন, আমি যখন মহাসভার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখন তারা আমার কী দোষ পেয়েছিলেন? ২১কেবল একটি বিষয়ে তারা আমার দোষ দিতে পারেন যে, আমি তাদের সামনে দাঁড়িয়ে জোর গলায় বলেছিলাম, ‘মৃতদের পুনরুত্থানের বিষয় নিয়ে আজ আপনাদের সামনে আমার বিচার হচ্ছে।’”
২২কিন্তু ফিলিক্স খুব ভালো করেই ‘পথের বিষয়ে’ জানতেন। বিচার বন্ধ করে তিনি বললেন, “প্রধান সেনাপতি লুসিয়াস আসার পর আমি তোমাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।” ২৩হযরত পৌল রা.-কে পাহারা দেবার জন্য তিনি লেফটেন্যান্টকে হুকুম দিলেন। কিন্তু তাঁকে কিছুটা স্বাধীনভাবে রাখতে বললেন এবং তাঁর বন্ধুরা যাতে তাঁর দেখাশোনা করতে পারেন, তাতে বাধা রাখলেন না।
২৪কয়েকদিন পর ফিলিক্স তার ইহুদি স্ত্রী দ্রুসিল্লাকে সংগে নিয়ে এলেন। তিনি হযরত পৌল রা.-কে ডেকে পাঠিয়ে তার কাছে হযরত মসিহ ইসার ওপর ইমানের কথা শুনলেন। ২৫হযরত পৌল রা. যখন সৎভাবে চলা, নিজেকে দমনে রাখা এবং রোজ-হাশরের বিষয়ে বললেন, তখন ফিলিক্স ভয় পেয়ে বললেন, “তুমি এখন যাও, সময়-সুযোগ মতো আমি তোমাকে ডাকবো।”
২৬একই সময় তিনি আশা করেছিলেন যে, হযরত পৌল রা. তাকে ঘুষ দেবেন এবং সে-জন্য বারবার তাকে ডেকে এনে তার সংগে কথা বলতেন। ২৭দু’বছর পার হয়ে গেলে পর ফিলিক্সের জায়গায় পর্কিয়ুস ফাস্তুস এলেন। এদিকে ফিলিক্স ইহুদিদের খুশি করার জন্য হযরত পৌল রা.-কে জেলখানাতেই রেখে গেলেন।
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১
১,২মাননীয় থিয়ফিল, হযরত ইসা আ.কে বেহেস্তে তুলে নেবার আগ পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন, তার সমস্তই আমি আগের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২
১পঞ্চাশতম দিনের ইদে যখন তারা সবাই এক জায়গায় মিলিত হলেন, ২তখন হঠাৎ আসমান থেকে জোর বাতাসের শব্দের মতো একটি শব্দ ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৩
১এক দিন বিকেল তিনটার এবাদতের সময় হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. বায়তুল-মোকাদ্দসে যাচ্ছিলেন। এবং জন্ম থেকেই খোঁড়া এক ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৪
১হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. যখন লোকদের সংগে কথা বলছিলেন, তখন ইমামেরা, বায়তুল-মোকাদ্দসের প্রধান কর্মচারী ও সদ্দুকিরা তাদের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৫
১আনানিয়াস নামে এক লোক ও তার স্ত্রী সাফিরা একটি সম্পত্তি বিক্রি করলো। ২তার স্ত্রীর জানা মতেই বিক্রির কিছু টাকা সে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৬
১ঐ দিনগুলোতে যখন উম্মতদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিলো, তখন গ্রীকরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো যে, প্রতিদিন খাবার বিতরণের সময় তাদের বিধবাদের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৭
১তখন প্রধান ইমাম হযরত স্তিফান র.কে জিজ্ঞেস করলেন, “এসব কি সত্যি?”২হযরত স্তিফান র. উত্তর দিলেন, “হে আমার ভাইয়েরা ও আমার ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৮
১ হযরত শৌল রা. তাকে হত্যার অনুমোদন দিচ্ছিলেন।সেদিন জেরুসালেমে হযরত ইসা আ. এর অনুসারীদের ওপরে ভীষণ জুলুম শুরু হলো। তাতে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৯
১-২এদিকে হযরত শৌল রা. হযরত ইসা মসিহের উম্মতদের হত্যা করার ভয় দেখাচ্ছিলেন।তিনি মহা-ইমামের কাছে গিয়ে দামেস্ক শহরের সিনাগোগগুলোতে দেবার জন্য ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১০
১কৈসরিয়া শহরে কর্নেলিয়াস নামে একজন লোক ইতালিয় সৈন্যদলের লেফটেন্যান্ট ছিলেন। ২তিনি আল্লাহ্ভক্ত ছিলেন এবং তিনি ও তার পরিবারের সবাই আল্লাহর ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১১
১অইহুদিরাও যে আল্লাহর কালামের ওপর ইমান এনেছেন, সে-কথা হাওয়ারিরা এবং সমস্ত ইহুদিয়ার ইমানদার ভাইয়েরা শুনলেন। ২এ-জন্য হযরত সাফওয়ান রা. যখন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১২
১সেই সময় বাদশাহ হেরোদ জুলুম করার জন্য কওমের কয়েকজনকে ধরে এনেছিলেন। ২তিনি হযরত ইউহোন্না রা.-র ভাই হযরত ইয়াকুব রা.-কে তরবারি ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৩
১ আন্তিয়খিয়ার অনুসারীদের মধ্যে কয়েকজন ওলি ও শিক্ষক ছিলেন। তাদের নাম হযরত বার্নবাস র., হযরত নিগের র. নামে পরিচিত সিমোন, ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৪
১ইকোনিয়ম শহরেও একই ঘটনা ঘটলো। সেখানে হযরত পৌল রা. ও হযরত বার্নবাস র. ইহুদিদের সিনাগোগে গিয়ে এমনভাবে কথা বললেন যে, ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৫
১সেই সময় ইহুদিয়া থেকে কয়েকজন লোক এলেন এবং ভাইদের এই শিক্ষা দিতে লাগলেন যে, “হযরত মুসা আ. এর শরিয়ত মতে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৬
১পরে হযরত পৌল রা. দেব্রা ও লুস্ত্রা শহরে গেলেন। সেখানে হযরত তিমথীয় র. নামে একজন উম্মত থাকতেন। তাঁর মা ছিলেন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৭
১হযরত পৌল রা. ও হযরত সিল র. আমফিপলি ও আপল্লো নিয়া হয়ে থিসালোনিকিতে এসে পৌঁছলেন। সেখানে ইহুদিদের একটি সিনাগোগ ছিলো। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৮
১এরপর হযরত পৌল রা. এথেন্স ছেড়ে করিন্থ শহরে গেলেন। সেখানে আকুইলা নামে এক ইহুদির সংগে তার দেখা হলো, জন্মসূত্রে তিনি ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৯
১আপল্লো যখন করিন্থে ছিলেন, সেই সময় হযরত পৌল রা. সে-সব এলাক ঘুরে ইফিসে এলেন। ২সেখানে তিনি কয়েকজন ইমানদারের দেখা পেলেন। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২০
১গোলমাল থামার পর হযরত পৌল রা. ইমানদারদের ডেকে পাঠালেন। তাঁদের উৎসাহ দেবার পর তাঁদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তিনি মেসিডোনিয়ার ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২১
১তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সোজা কোস দ্বীপে গেলাম। পরদিন আমরা রোডস দ্বীপে এলাম। তারপর সেখান থেকে পাতারা গেলাম। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২২
১“ভাইয়েরা ও পিতারা, এখন নিজের পক্ষে আমার উত্তর শুনুন।” ২তারা তাঁকে ইব্রানী ভাষায় কথা বলতে শুনে একেবারে চুপ হয়ে গেলো।৩তখন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৩
১হযরত পৌল রা. সোজা মহাসভার লোকদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমার ভাইয়েরা, আজ পর্যন্ত আমি আল্লাহর সামনে পরিষ্কার বিবেকে জীবন-যাপন করছি।” ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৪
১পাঁচদিন পরে মহাইমাম অননিয় কয়েকজন ইহুদি বুজুর্গকে ও তর্তুল্লস নামে একজন উকিলকে নিয়ে সেখানে এলেন এবং গভর্নরের কাছে হযরত পৌল ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৫
১ফাস্তুস সেই প্রদেশে আসার তিনদিন পর কৈসরিয়া থেকে জেরুসালেমে গেলেন। ২সেখানে প্রধান ইমামেরা ও নেতারা তার কাছে গিয়ে পৌলের বিরুদ্ধে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৬
১তখন আগ্রিপ্প হযরত পৌল রা.-কে বললেন, “তোমার নিজের পক্ষে কথা বলার জন্য তোমাকে অনুমতি দেয়া গেলো।” ২তখন তিনি হাত বাড়িয়ে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৭
১যখন জাহাজে করে আমাদের ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, তখন হযরত পৌল রা. এবং আরো কয়েকজন বন্দিকে জুলিয়াস নামে সম্রাটের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৮
১,২আমরা নিরাপদে কিনারে পৌঁছে জানতে পারলাম যে, দ্বীপটার নাম মাল্টা। এর অধিবাসীরা আমাদের সংগে খুব দয়া দেখালো। তখন বৃষ্টি আরম্ভ ...