১অইহুদিরাও যে আল্লাহর কালামের ওপর ইমান এনেছেন, সে-কথা হাওয়ারিরা এবং সমস্ত ইহুদিয়ার ইমানদার ভাইয়েরা শুনলেন। ২এ-জন্য হযরত সাফওয়ান রা. যখন জেরুসালেমে ফিরে এলেন, তখন খতনা করানো ইমানদারেরা তাঁকে দোষ দিয়ে বললেন, ৩“আপনি কেনো খতনা না-করানো লোকদের ঘরে গিয়েছেন এবং তাদের সংগে খাওয়া-দাওয়া করেছেন?”
৪তখন হযরত সাফওয়ান রা. এক-এক করে সমস্ত ঘটনা তাদের বুঝিয়ে বললেন- ৫“আমি জাফা শহরে মোনাজাত করছিলাম। এমন সময় তন্দ্রার মতো অবস্থায় পড়ে একটি দর্শন পেলাম। ৬আমি দেখলাম, বড়ো চাদরের মতো কি একটি জিনিস চার কোণা ধরে আসমান থেকে আমার কাছে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমি ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম তার মধ্যে নানা রকম পশু, বুনো জানোয়ার, বুকে হাঁটা প্রাণী এবং পাখি আছে।
৭আমি শুনতে পেলাম একটি কণ্ঠস্বর আমাকে বলছেন, ‘সাফওয়ান, উঠো; মেরে খাও।’ ৮কিন্তু আমি বললাম, “না, না, মালিক, কিছুতেই না; হারাম কোনো কিছু কখনো আমি মুখে দেইনি।’ ৯কিন্তু আসমান থেকে সেই কণ্ঠস্বর দ্বিতীয় বার বললেন, ‘আল্লাহ্ যা হালাল করেছেন, তাকে তুমি হারাম বলো না।’ ১০এরকম তিন বার হলো, তারপর সবকিছু আবার আসমানে তুলে নেয়া হলো।
১১এর প্রায় সংগে-সংগে আমি যে-বাড়িতে ছিলাম, সেই বাড়িতে তিন জন লোক এসে উপস্থিত হলো। কৈসরিয়া থেকে তাদের পাঠানো হয়েছিলো। ১২আল্লাহর রুহ আমাকে বললেন, যেনো কোনো সন্দেহ না-করে আমি তাদের সংগে যাই এবং তাদের ও আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য না-করি। এই ছয় ভাইও আমার সংগে গিয়েছিলেন এবং আমরা সেই লোকের বাড়িতে ঢুকলাম।
১৩তিনি আমাদের বললেন, কীভাবে একজন ফেরেস্তাকে তার ঘরে দেখলেন এবং তার কথা শুনলেন- ‘সাফওয়ান, যাকে পিতরও বলা হয়, তাকে ডেকে আনতে তুমি জাফা শহরে লোক পাঠাও। ১৪সে তোমাকে একটি সংবাদ দেবে এবং এতে তুমি ও তোমার গোটা পরিবার নাজাত পাবে।’ ১৫এবং আমি কথা বলতে শুরু করলে আল্লাহর রুহ তাদের ওপরে নেমে এলেন, ঠিক যেভাবে প্রথমে আমাদের ওপরে এসেছিলেন।
১৬তখন হযরত ইসা আ. যা বলেছিলেন, সে-কথা আমার মনে পড়লো- ‘ইয়াহিয়া পানিতে বায়াত দিতেন কিন্তু তোমরা আল্লাহর রুহে বায়াত পাবে।’ ১৭যদি আল্লাহ্ তাদের একই দান দেন, যে-দান হযরত ইসা মসিহের ওপর ইমান আনার পর আমাদের দেয়া হয়েছিলো, তাহলে আমি কে যে, আল্লাহকে বাধা দিতে পারি?” ১৮এ-কথা শুনে তাঁরা শান্ত হলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করে বললেন, “তাহলে আল্লাহ্ অইহুদিদেরও তওবা করার সুযোগ দিলেন, যা তাদেরকে নাজাতে নিয়ে যাবে।”
১৯হযরত স্তিফান র.-কে কেন্দ্র করে ইমানদারদের ওপর জুলুমের কারণে যারা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিলেন, তাঁরা ফিনিসিয়া, সাইপ্রাস ও আন্তিয়খিয়া পর্যন্ত গিয়ে কেবল ইহুদিদের কাছেই আল্লাহর কালাম প্রচার করেছিলেন। ২০কিন্তু তাঁদের মধ্যে সাইপ্রাস ও সাইরিনির কয়েকজন আন্তিয়খিয়াতে গিয়ে গ্রীকদের কাছে হযরত ইসা মসিহের বিষয়ে প্রচার করতে লাগলেন। ২১আল্লাহর রহমতের হাত তাঁদের ওপর ছিলো, এবং অনেক লোক হযরত ইসা মসিহের ওপর ইমান এনে তাঁর দিকে ফিরলো।
২২এই খবর জেরুসালেমের কওমের লোকদের কানে গেলে তাঁরা হযরত বার্নবাস র.-কে আন্তিয়খিয়াতে পাঠিয়ে দিলেন। ২৩তিনি সেখানে গিয়ে লোকদের প্রতি আল্লাহর রহমত দেখে আনন্দিত হলেন এবং আল্লাহর শুকরিয়া জানালেন। ২৪হযরত ইসা আ. এর প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে ও এবাদতে মনোযোগী হতে তিনি তাদের উৎসাহ দিলেন। কারণ তিনি একজন ভালো লোক ছিলেন এবং ইমানে ও আল্লাহর রুহে পূর্ণ ছিলেন। অনেক মানুষকেই তিনি হযরত ইসা আ. এর কাছে নিয়ে এসেছিলেন।
২৫,২৬এরপর হযরত বার্নবাস র. হযরত শৌল রা.-র খোঁজে তার্র্সো শহরে গেলেন। আর তাঁকে খুঁজে পেয়ে আন্তিয়খিয়াতে নিয়ে এলেন। তাঁরা প্রায় এক বছর পর্যন্ত কওমের সংগে মিলিত হয়ে অনেক লোককে শিক্ষা দিলেন। এবং এই আন্তিয়খিয়াতেই প্রথম সেখানকার অনুসারীদের তাদের ভাষায় খ্রীষ্টিয়ানুস্ নামে ডাকা হয়।
২৭,২৮সেই সময় জেরুসালেম থেকে বিশেষ কয়েকজন ইমানদার ব্যক্তি আন্তিয়খিয়াতে এলেন। তাদের মধ্যে আগাব নামে একজন উঠে দাঁড়িয়ে রুহের পরিচালনায় বললেন যে, সারা দুনিয়ায় ভীষণ এক দুর্ভিক্ষ হবে।
এবং ক্লডিয়াসের রাজত্বের সময়ে সে-কথা পূর্ণ হয়েছিলো। ২৯তখন কওমের লোকের ঠিক করলেন যে, তারা প্রত্যেকে নিজ-নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ইহুদিয়ার ইমানদার ভাইদের জন্য সাহায্য পাঠাবেন। ৩০তারা হযরত বার্নবাস র. ও হযরত শৌল রা.-র হাত দিয়ে জেরুসালেমে বুজুর্গদের কাছে তা পাঠিয়ে ছিলেন।
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১
১,২মাননীয় থিয়ফিল, হযরত ইসা আ.কে বেহেস্তে তুলে নেবার আগ পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন, তার সমস্তই আমি আগের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২
১পঞ্চাশতম দিনের ইদে যখন তারা সবাই এক জায়গায় মিলিত হলেন, ২তখন হঠাৎ আসমান থেকে জোর বাতাসের শব্দের মতো একটি শব্দ ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৩
১এক দিন বিকেল তিনটার এবাদতের সময় হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. বায়তুল-মোকাদ্দসে যাচ্ছিলেন। এবং জন্ম থেকেই খোঁড়া এক ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৪
১হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. যখন লোকদের সংগে কথা বলছিলেন, তখন ইমামেরা, বায়তুল-মোকাদ্দসের প্রধান কর্মচারী ও সদ্দুকিরা তাদের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৫
১আনানিয়াস নামে এক লোক ও তার স্ত্রী সাফিরা একটি সম্পত্তি বিক্রি করলো। ২তার স্ত্রীর জানা মতেই বিক্রির কিছু টাকা সে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৬
১ঐ দিনগুলোতে যখন উম্মতদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিলো, তখন গ্রীকরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো যে, প্রতিদিন খাবার বিতরণের সময় তাদের বিধবাদের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৭
১তখন প্রধান ইমাম হযরত স্তিফান র.কে জিজ্ঞেস করলেন, “এসব কি সত্যি?”২হযরত স্তিফান র. উত্তর দিলেন, “হে আমার ভাইয়েরা ও আমার ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৮
১ হযরত শৌল রা. তাকে হত্যার অনুমোদন দিচ্ছিলেন।সেদিন জেরুসালেমে হযরত ইসা আ. এর অনুসারীদের ওপরে ভীষণ জুলুম শুরু হলো। তাতে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৯
১-২এদিকে হযরত শৌল রা. হযরত ইসা মসিহের উম্মতদের হত্যা করার ভয় দেখাচ্ছিলেন।তিনি মহা-ইমামের কাছে গিয়ে দামেস্ক শহরের সিনাগোগগুলোতে দেবার জন্য ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১০
১কৈসরিয়া শহরে কর্নেলিয়াস নামে একজন লোক ইতালিয় সৈন্যদলের লেফটেন্যান্ট ছিলেন। ২তিনি আল্লাহ্ভক্ত ছিলেন এবং তিনি ও তার পরিবারের সবাই আল্লাহর ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১১
১অইহুদিরাও যে আল্লাহর কালামের ওপর ইমান এনেছেন, সে-কথা হাওয়ারিরা এবং সমস্ত ইহুদিয়ার ইমানদার ভাইয়েরা শুনলেন। ২এ-জন্য হযরত সাফওয়ান রা. যখন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১২
১সেই সময় বাদশাহ হেরোদ জুলুম করার জন্য কওমের কয়েকজনকে ধরে এনেছিলেন। ২তিনি হযরত ইউহোন্না রা.-র ভাই হযরত ইয়াকুব রা.-কে তরবারি ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৩
১ আন্তিয়খিয়ার অনুসারীদের মধ্যে কয়েকজন ওলি ও শিক্ষক ছিলেন। তাদের নাম হযরত বার্নবাস র., হযরত নিগের র. নামে পরিচিত সিমোন, ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৪
১ইকোনিয়ম শহরেও একই ঘটনা ঘটলো। সেখানে হযরত পৌল রা. ও হযরত বার্নবাস র. ইহুদিদের সিনাগোগে গিয়ে এমনভাবে কথা বললেন যে, ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৫
১সেই সময় ইহুদিয়া থেকে কয়েকজন লোক এলেন এবং ভাইদের এই শিক্ষা দিতে লাগলেন যে, “হযরত মুসা আ. এর শরিয়ত মতে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৬
১পরে হযরত পৌল রা. দেব্রা ও লুস্ত্রা শহরে গেলেন। সেখানে হযরত তিমথীয় র. নামে একজন উম্মত থাকতেন। তাঁর মা ছিলেন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৭
১হযরত পৌল রা. ও হযরত সিল র. আমফিপলি ও আপল্লো নিয়া হয়ে থিসালোনিকিতে এসে পৌঁছলেন। সেখানে ইহুদিদের একটি সিনাগোগ ছিলো। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৮
১এরপর হযরত পৌল রা. এথেন্স ছেড়ে করিন্থ শহরে গেলেন। সেখানে আকুইলা নামে এক ইহুদির সংগে তার দেখা হলো, জন্মসূত্রে তিনি ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৯
১আপল্লো যখন করিন্থে ছিলেন, সেই সময় হযরত পৌল রা. সে-সব এলাক ঘুরে ইফিসে এলেন। ২সেখানে তিনি কয়েকজন ইমানদারের দেখা পেলেন। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২০
১গোলমাল থামার পর হযরত পৌল রা. ইমানদারদের ডেকে পাঠালেন। তাঁদের উৎসাহ দেবার পর তাঁদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তিনি মেসিডোনিয়ার ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২১
১তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সোজা কোস দ্বীপে গেলাম। পরদিন আমরা রোডস দ্বীপে এলাম। তারপর সেখান থেকে পাতারা গেলাম। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২২
১“ভাইয়েরা ও পিতারা, এখন নিজের পক্ষে আমার উত্তর শুনুন।” ২তারা তাঁকে ইব্রানী ভাষায় কথা বলতে শুনে একেবারে চুপ হয়ে গেলো।৩তখন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৩
১হযরত পৌল রা. সোজা মহাসভার লোকদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমার ভাইয়েরা, আজ পর্যন্ত আমি আল্লাহর সামনে পরিষ্কার বিবেকে জীবন-যাপন করছি।” ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৪
১পাঁচদিন পরে মহাইমাম অননিয় কয়েকজন ইহুদি বুজুর্গকে ও তর্তুল্লস নামে একজন উকিলকে নিয়ে সেখানে এলেন এবং গভর্নরের কাছে হযরত পৌল ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৫
১ফাস্তুস সেই প্রদেশে আসার তিনদিন পর কৈসরিয়া থেকে জেরুসালেমে গেলেন। ২সেখানে প্রধান ইমামেরা ও নেতারা তার কাছে গিয়ে পৌলের বিরুদ্ধে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৬
১তখন আগ্রিপ্প হযরত পৌল রা.-কে বললেন, “তোমার নিজের পক্ষে কথা বলার জন্য তোমাকে অনুমতি দেয়া গেলো।” ২তখন তিনি হাত বাড়িয়ে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৭
১যখন জাহাজে করে আমাদের ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, তখন হযরত পৌল রা. এবং আরো কয়েকজন বন্দিকে জুলিয়াস নামে সম্রাটের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৮
১,২আমরা নিরাপদে কিনারে পৌঁছে জানতে পারলাম যে, দ্বীপটার নাম মাল্টা। এর অধিবাসীরা আমাদের সংগে খুব দয়া দেখালো। তখন বৃষ্টি আরম্ভ ...