১তোমরা অন্তরে অস্থির হয়ো না। আল্লাহর ওপর ইমান রাখো, আমার ওপরও ইমান রাখো। ২আমার প্রতিপালকের কাছে থাকার অনেক জায়গা আছে। যদি না থাকতো, তাহলে কি আমি তোমাদের বলতাম যে, আমি তোমাদের জন্য জায়গা প্রস্তুত করতে যাচ্ছি? ৩এবং যদি আমি যাই আর তোমাদের জন্য জায়গা প্রস্তুত করি, আমি আবার ফিরে আসবো এবং তোমাদেরকে আমার কাছে নিয়ে যাবো, যেনো আমি যেখানে থাকি, তোমরাও সেখানে থাকতে পারো। ৪আর আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে যাবার পথ তোমরা জানো।”
৫হযরত থোমা রা. তাঁকে বললেন, “হুজুর, আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা আমরা জানি না, আমরা কীভাবে সেই পথ জানবো?” ৬হযরত ইসা আ. তাকে বললেন, “আমিই পথ, সত্য ও জীবন। আমার মধ্য দিয়ে না গেলে কেউই আল্লাহর কাছে আসতে পারে না। ৭যদি তোমরা আমাকে জানো, তাহলে আমার প্রতিপালককে জানবে। এখন থেকে তোমরা তাঁকে জানবে এবং তোমরা তাঁকে দেখেছো।”
৮হযরত ফিলিপ রা. তাঁকে বললেন, “হুজুর, প্রতিপালককে আমাদের দেখান, তাহলে আমরা সন্তুষ্ট হবো।” ৯হযরত ইসা আ. তাকে বললেন, “ফিলিপ, এতোদিন ধরে আমি তোমাদের সাথে সাথে আছি অথচ এখনো তুমি আমাকে চেনো না? যে আমাকে দেখেছে, সে প্রতিপালককে দেখেছে। ১০কীভাবে তুমি বলতে পারো যে, ‘প্রতিপালককে আমাদের দেখান?’ তুমি কি বিশ্বাস করো না যে, আমি প্রতিপালকের মধ্যে আছি এবং প্রতিপালক আমার মধ্যে আছেন? আমি যেকথা বলি তা আমার নিজের কথা নয় কিন্তু যিনি আমার মধ্যে আছেন, সেই প্রতিপালক তাঁর নিজের কাজ করেন। ১১আমার ওপর ইমান রাখো যে, আমি প্রতিপালকের মধ্যে আছি এবং প্রতিপালক আমার মধ্যে আছেন। কিন্তু তুমি যদি তা না করো, তবে কাজগুলোর জন্য আমার ওপর ইমান আনো।
১২আমি তোমাকে সত্যি সত্যিই বলছি, যে কেউ আমার ওপর ইমান আনে, আমি যে-কাজ করি সে তা করবে; এমনকি এর থেকেও মহৎ কাজ করবে, কারণ আমি প্রতিপালকের কাছে যাচ্ছি। ১৩তোমরা আমার নামে যা চাবে, আমি তা করবো, যেনো একান্ত প্রিয় মনোনীতজনের মাধ্যমে আল্লাহ মহিমান্বিত হন। ১৪তোমরা যদি আমার নামে আমার কাছে কিছু চাও, তাহলে নিশ্চয়ই আমি তা করবো।
১৫যদি তোমরা আমাকে মহব্বত করো, তাহলে আমার হুকুমগুলো পালন করবে। ১৬আমি প্রতিপালকের কাছে চাবো এবং তিনি তোমাদের সাথে চিরদিন থাকার জন্য আরেকজন সাহায্যকারী পাঠাবেন। ১৭ইনি হচ্ছেন সত্যের রুহ। দুনিয়া তাঁকে গ্রহণ করতে পারে না, কারণ দুনিয়া তাঁকে দেখতে পায় না এবং জানেও না; কিন্তু তোমরা তাঁকে জানো, কারণ তিনি তোমাদের সাথে থাকবেন এবং তিনি তোমাদের মধ্যে থাকবেন।
১৮আমি তোমাদের অসহায় রেখে যাবো না, আমি তোমাদের কাছে আসবো। ১৯কিছুদিনের মধ্যে দুনিয়া আমাকে আর দেখতে পাবে না কিন্তু তোমরা আমাকে দেখবে, কারণ আমি জীবিত এবং তোমরাও জীবিত থাকবে। ২০সেদিন তোমরা জানবে যে, আমি প্রতিপালকের মধ্যে আছি আর তোমরা আমার মধ্যে আছো এবং আমি আছি তোমাদের মধ্যে।
২১আমার হুকুম যাদের কাছে আছে এবং যারা তা পালন করে, তারাই আমাকে মহব্বত করে। এবং যারা আমাকে মহব্বত করে, আমার প্রতিপালক তাদের মহব্বত করবেন; আমিও তাদের মহব্বত করবো এবং নিজেকে তাদের কাছে প্রকাশ করবো।”
২২ইহুদা, ইস্কারিয়োত নন- তাঁকে বললেন, “হুজুর, এটি কেমন কথা যে, আপনি নিজেকে আমাদের কাছে প্রকাশ করবেন অথচ দুনিয়ার কাছে নয়।” ২৩হযরত ইসা আ. উত্তর দিলেন, “যারা আমাকে মহব্বত করে, তারা আমার হুকুম পালন করবে এবং আমার প্রতিপালক তাদের মহব্বত করবেন আর আমরা এসে তাদের মধ্যে বসবাস করবো। ২৪যে আমাকে মহব্বত করে না, সে আমার কালাম পালন করে না। এবং তোমরা যে কালাম শুনছো তা আমার নয় কিন্তু তা আমার প্রতিপালকের, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
২৫আমি তোমাদের সাথে থাকতে থাকতেই তোমাদের এসব কথা বলছি। ২৬কিন্তু সাহায্যকারী, যিনি সত্যের রুহ, যাকে প্রতিপালক আমার নামে পাঠিয়ে দেবেন, তিনি তোমাদের সবকিছু শিক্ষা দেবেন। এবং আমি যা যা বলেছি, তার সব তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেবেন। ২৭আমি তোমাদের জন্য শান্তি রেখে যাচ্ছি; আমার শান্তি আমি তোমাদের দিচ্ছি। দুনিয়া যেভাবে দেয় আমি সেভাবে তোমাদেরকে দেই না। তোমাদের অন্তর অস্থির হতে দিয়ো না এবং ভয় পেয়ো না।
২৮তোমরা আমাকে একথা বলতে শুনেছো, ‘আমি চলে যাচ্ছি এবং আমি আবার তোমাদের কাছে আসছি।’ যদি তোমরা আমাকে মহব্বত করো, তাহলে আনন্দ করবে, কারণ আমি আল্লাহর কাছে যাচ্ছি এবং তিনি আমার থেকে মহান। ২৯এসব ঘটার আগেই আমি তোমাদের বললাম, যেনো যখন এসব ঘটবে, তখন তোমরা ইমান আনতে পারো। ৩০আমি তোমাদের আর বেশি কথা বলবো না, কারণ এই দুনিয়ার শাসনকর্তা আসছে। আমার ওপর তার কোনো ক্ষমতা নেই। ৩১প্রতিপালক আমাকে যে-হুকুম দিয়েছেন, আমি তা-ই করছি, যেনো দুনিয়া জানতে পারে যে, আমি প্রতিপালককে মহব্বত করি। ওঠো, চলো, আমরা আমাদের পথে যাই।
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১
১-৫শুরু থেকেই আল্লাহ আছেন। আল্লাহর কালাম তাঁর নিজের মধ্যেই ছিলো, এই কালামই হলো আল্লাহর কথা। আল্লাহ্ তাঁর কথা দ্বারাই সব ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ২
১তৃতীয় দিনে গালিলের কান্না গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান ছিলো এবং হযরত ইসা আ.র মা সেখানে ছিলেন। ২হযরত ইসা আ. এবং ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৩
১নিকদিম নামে একজন ফরিসি ছিলেন; তিনি ছিলেন ইহুদিদের একজন নেতা। ২তিনি রাতের বেলায় হযরত ইসা আ.র কাছে এলেন এবং বললেন, ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৪
১যখন হযরত ইসা আ. বুঝতে পারলেন যে, ফরিসিরা শুনতে পেয়েছেন, “ হযরত ইসা আ. হযরত ইয়াহিয়া আ.র থেকে বেশি উম্মত ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৫
১এরপর ইহুদিদের আরেকটি ইদের সময় হলো এবং হযরত ইসা আ. জেরুসালেমে গেলেন। ২জেরুসালেমের মেষ-দরজার কাছে একটি পুকুর ছিলো। ৩হিব্রু ভাষায় ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৬
১অতঃপর হযরত ইসা আ. গালিল লেকের ওপারে গেলেন। একে তিবিরিয়া লেকও বলা হয়। ২বিশাল এক জনতা তাঁর পেছনে পেছনে যাচ্ছিলো, ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৭
১এরপর হযরত ইসা আ. গালিলে চলাফেরা করছিলেন। তিনি ইহুদিয়ায় যেতে চাইলেন না, কারণ ইহুদিরা তাঁকে হত্যা করার সুযোগ খুঁজছিলো। ২এই ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৮
১অতঃপর তারা প্রত্যেকে বাড়ি চলে গেলেন। এদিকে হযরত ইসা আ.ও জৈতুন পাহাড়ে চলে গেলেন। ২এবং খুব ভোরে উঠে তিনি আবার ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ৯
১যেতে যেতে তিনি এক জন্মান্ধকে দেখতে পেলেন। ২তাঁর সাহাবিরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “হুজুর, কার গুনাহর কারণে এই লোকটি অন্ধ হয়ে ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১০
১আমি তোমাদের সত্যি সত্যিই বলছি, যে কেউ দরজা দিয়ে না ঢুকে অন্য উপায়ে ভেড়ার খোঁয়াড়ে ঢোকে, সে চোর ও ডাকাত। ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১১
১বেথানিয়া গ্রামের লাসার নামে এক লোকের অসুখ হয়েছিলো। মরিয়ম ও তার বোন মার্থা সেই একই গ্রামে থাকতেন। ২ইনি সেই মরিয়ম, ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১২
১ইদুল-ফেসাখের ছয়দিন আগে হযরত ইসা আ. বেথানিয়ায় লাসারের বাড়িতে এলেন। এই লাসারকেই তিনি মৃত থেকে জীবিত করে তুলেছিলেন। ২সেখানে তারা ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৩
১ইদুল-ফেসাখের আগে হযরত ইসা আ. বুঝতে পারলেন যে, তাঁর এই দুনিয়া ছেড়ে প্রতিপালকের কাছে চলে যাবার সময় হয়ে গেছে। এই ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৪
১তোমরা অন্তরে অস্থির হয়ো না। আল্লাহর ওপর ইমান রাখো, আমার ওপরও ইমান রাখো। ২আমার প্রতিপালকের কাছে থাকার অনেক জায়গা আছে। ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৫
১আমি প্রকৃত আঙুরগাছ এবং আমার প্রতিপালক চাষী। ২আমার যেসব ডালে ফল ধরে না, সেগুলো তিনি কেটে ফেলেন আর যেসব ডালে ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৬
১আমি এসব কথা তোমাদের জানাচ্ছি, যেনো তোমরা বাধা না পাও। ২তারা তোমাদেরকে সিনাগোগ থেকে বের করে দেবে। প্রকৃতপক্ষে এমন এক ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৭
১এসব কথা বলার পর হযরত ইসা আ. আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, “হে আমার প্রতিপালক, সময় এসেছে, তোমার একান্ত প্রিয় মনোনীতজনকে ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৮
১এসব কথা বলার পর হযরত ইসা আ. তাঁর হাওয়ারিদের নিয়ে কিদরোন উপত্যকা পার হয়ে একটি জায়গায় গেলেন। সেখানে একটি বাগান ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ১৯
১অতঃপর পিলাত হযরত ইসা আ.কে চাবুক মারালেন। ২আর সৈন্যরা কাঁটালতা দিয়ে মুকুট বানিয়ে তাঁর মাথায় পরালো এবং তাঁকে একটি বেগুনি ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ২০
১সপ্তাহের প্রথম দিন খুব ভোরে অন্ধকার থাকতে মগ্দলিনি মরিয়ম কবরের কাছে এলেন এবং দেখলেন যে, কবরের মুখ থেকে পাথরটি সরিয়ে ...
কালিমাতুল্লাহ: রুকু – ২১
১এসবের পরে তিবিরিয়া লেকের পাড়ে হযরত ইসা আ. আবার তাঁর হাওয়ারিদের দেখা দিলেন। তিনি নিজেকে তাদের কাছে এভাবে দেখালেন: ২হযরত ...