১ইকোনিয়ম শহরেও একই ঘটনা ঘটলো। সেখানে হযরত পৌল রা. ও হযরত বার্নবাস র. ইহুদিদের সিনাগোগে গিয়ে এমনভাবে কথা বললেন যে, অনেক ইহুদি ও আল্লাহ্ ভক্ত অইহুদি ইমান আনলো। ২কিন্তু অবিশ্বাসী ইহুদিরা অইহুদিদের উসকে দিয়ে ইমানদার ভাইদের বিরুদ্ধে তাদের মন বিষিয়ে তুললো।
৩তাই তাঁরা বেশ কিছু দিন সেখানে রইলেন এবং সাহসের সংগে আল্লাহর কথা বলতে থাকলেন।
তাঁরা তাঁর দয়ার কালাম প্রচার করলেন এবং সে-সব কথা যে বিশ্বাসযোগ্য, তার প্রমাণ হিসাবে তাঁরা আশ্চর্য কাজও করলেন। ৪তবুও শহরের লোকেরা দু’ভাগ হয়ে গেলো। কেউ-কেউ ইহুদিদের পক্ষে, আবার কেউ-কেউ হাওয়ারিদের পক্ষে গেলো।
৫যখন অইহুদি ও ইহুদি এই দু’দলই তাদের নেতাদের সংগে মিলে হাওয়ারিদেরকে অত্যাচার করার ও পাথর মারার ষড়যন্ত্র করলো, ৬তখন হাওয়ারিরা তা জানতে পেরে লুকাওনিয়া প্রদেশের লুস্ত্রা ও দেব্রা শহরে এবং তার আশেপাশের জায়গায় পালিয়ে গেলেন। ৭ এবং সে-সব জায়গায় তাঁরা ইঞ্জিল প্রচার করতে থাকলেন।
৮লুস্ত্রায় এমন এক লোক ছিলো, যে তার পা ব্যবহার করতে পারতো না। সে কখনো হাঁটেনি। সে জন্ম থেকেই খোঁড়া ছিলো। ৯-১০হযরত পৌল রা. যখন কথা বলছিলেন, তখন সে শুনছিলো। তিনি সোজা তার দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে, সুস্থ হবার মতো ইমান তার আছে। এতে তিনি জোরে বললেন, “তোমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াও।” তখন লোকটি লাফ দিয়ে উঠে হাঁটতে লাগলো।
১১হযরত পৌল রা. যা করলেন তা দেখে লোকেরা লুকাওনীয় ভাষায় চিৎকার করে বললো, “দেবতারা মানুষ হয়ে আমাদের কাছে নেমে এসেছেন।” ১২তারা হযরত বার্নবাস র. নাম দিলো জিউস এবং হযরত পৌল রা. প্রধান বক্তা হওয়ায় তার নাম দিলো হার্মিস। ১৩জিউস দেবতার মন্দিরটা ছিলো শহরের বাইরে। মন্দিরের পুরোহিত ষাঁড় ও মালা নিয়ে এলো। কারণ সে এবং সমস্ত লোকেরা পশু উৎসর্গ করতে চাইলো।
১৪হযরত বার্নবাস র. ও হযরত পৌল রা. সে-কথা শুনতে পেয়ে নিজেদের কাপড় ছিঁড়ে দৌড়ে লোকদের মধ্যে গেলেন এবং চিৎকার করে বললেন, ১৫“বন্ধুরা, আপনারা কেনো এসব করছেন? আমরা তো কেবল আপনাদের মতো মানুষ। আমরা আপনাদের কাছে সুখবর এনেছি, যেনো আপনারা এসব অসার জিনিস ছেড়ে জীবন্ত আল্লাহর দিকে ফেরেন। তিনিই আসমান, জমিন, সমুদ্র এবং সেগুলোর মধ্যে যা আছে, তার সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন।
১৬আগেকার দিনে সব জাতিকেই তিনি তাদের ইচ্ছামতো চলতে দিয়েছেন।
১৭তবুও তিনি সব সময় ভালো কাজের দ্বারা নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি আসমান থেকে বৃষ্টি দিয়ে এবং সময় মতো ফসল দান করে, প্রচুর খাবার দিয়ে, আপনাদের মনকে আনন্দে পূর্ণ করেছেন।” ১৮এসব কথা বলে অনেক কষ্টে তারা পশু উৎসর্গ করা থেকে তাদেরকে থামালেন।
১৯পরে যখন আন্তিয়খিয়া ও ইকোনিয়ম থেকে আসা কয়েকজন ইহুদি লোকদের উসকে দিলো, তখন তারা হযরত পৌল রা.-কে পাথর মারলো এবং তিনি ইন্তেকাল করেছেন মনে করে তাকে টেনে নিয়ে গিয়ে শহরের বাইরে ফেলে রাখলো। ২০কিন্তু পরে ইমানদারেরা তার চারপাশে জমায়েত হলে তিনি উঠে শহরে ফিরে গেলেন। পরদিন তিনি হযরত বার্নবাস র. সংগে দেব্রা শহরে চলে গেলেন।
২১-২২দেব্রাতে ইঞ্জিল প্রচার করায় সেখানে অনেকে ইমান আনলে পর তাঁরা লুস্ত্রা, ইকোনিয়ম ও আন্তিয়খিয়াতে ফিরে গেলেন। সেখানকার উম্মতদের ইমান বাড়িয়ে তাঁদের শক্তিশালী করলেন এবং ইমানে স্থির থাকতে উৎসাহ দিলেন। তাঁরা বললেন, “অনেক জুলুম সহ্য করার মধ্য দিয়ে আমরা অবশ্যই আল্লাহর রাজ্যে ঢুকবো।”
২৩এরপর তাঁরা প্রত্যেক কওমে বুজুর্গদের নিয়োগ করলেন এবং যে- হযরত ইসা আ. এর ওপর তাঁরা ইমান এনেছিলেন, মোনাজাত ও রোজা রেখে সেই হযরত ইসা আ. এর হাতেই তাদের তুলে দিলেন। ২৪এরপর তাঁরা পিসিদিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়ে পাম্ফুলিয়ায় পৌঁছলেন। ২৫পের্গায় আল্লাহর কালাম প্রচার করার পর তাঁরা অত্তালিয়ায় গেলেন। ২৬সেখান থেকে তাঁরা জাহাজে করে আন্তিয়খিয়ায় ফিরে এলেন। যে-কাজ তাঁরা শেষ করেছিলেন, তার জন্য এখানেই তাঁদেরকে আল্লাহর রহমতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছিলো।
২৭এখানে পৌঁছে তাঁরা কওমের সবাইকে এক জায়গায় জমায়েত করলেন এবং আল্লাহ্ তাঁদের মধ্যদিয়ে যা করেছেন, তার সবই তাঁদের জানালেন; এবং কীভাবে অ-ইহুদিদের জন্য ইমানের দরজা খুলে দেয়া হয়েছে, তাও বললেন। ২৮অতঃপর তাঁরা কিছুদিন উম্মতদের সংগে থাকলেন।
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১
১,২মাননীয় থিয়ফিল, হযরত ইসা আ.কে বেহেস্তে তুলে নেবার আগ পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন, তার সমস্তই আমি আগের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২
১পঞ্চাশতম দিনের ইদে যখন তারা সবাই এক জায়গায় মিলিত হলেন, ২তখন হঠাৎ আসমান থেকে জোর বাতাসের শব্দের মতো একটি শব্দ ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৩
১এক দিন বিকেল তিনটার এবাদতের সময় হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. বায়তুল-মোকাদ্দসে যাচ্ছিলেন। এবং জন্ম থেকেই খোঁড়া এক ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৪
১হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. যখন লোকদের সংগে কথা বলছিলেন, তখন ইমামেরা, বায়তুল-মোকাদ্দসের প্রধান কর্মচারী ও সদ্দুকিরা তাদের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৫
১আনানিয়াস নামে এক লোক ও তার স্ত্রী সাফিরা একটি সম্পত্তি বিক্রি করলো। ২তার স্ত্রীর জানা মতেই বিক্রির কিছু টাকা সে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৬
১ঐ দিনগুলোতে যখন উম্মতদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিলো, তখন গ্রীকরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো যে, প্রতিদিন খাবার বিতরণের সময় তাদের বিধবাদের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৭
১তখন প্রধান ইমাম হযরত স্তিফান র.কে জিজ্ঞেস করলেন, “এসব কি সত্যি?”২হযরত স্তিফান র. উত্তর দিলেন, “হে আমার ভাইয়েরা ও আমার ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৮
১ হযরত শৌল রা. তাকে হত্যার অনুমোদন দিচ্ছিলেন।সেদিন জেরুসালেমে হযরত ইসা আ. এর অনুসারীদের ওপরে ভীষণ জুলুম শুরু হলো। তাতে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৯
১-২এদিকে হযরত শৌল রা. হযরত ইসা মসিহের উম্মতদের হত্যা করার ভয় দেখাচ্ছিলেন।তিনি মহা-ইমামের কাছে গিয়ে দামেস্ক শহরের সিনাগোগগুলোতে দেবার জন্য ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১০
১কৈসরিয়া শহরে কর্নেলিয়াস নামে একজন লোক ইতালিয় সৈন্যদলের লেফটেন্যান্ট ছিলেন। ২তিনি আল্লাহ্ভক্ত ছিলেন এবং তিনি ও তার পরিবারের সবাই আল্লাহর ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১১
১অইহুদিরাও যে আল্লাহর কালামের ওপর ইমান এনেছেন, সে-কথা হাওয়ারিরা এবং সমস্ত ইহুদিয়ার ইমানদার ভাইয়েরা শুনলেন। ২এ-জন্য হযরত সাফওয়ান রা. যখন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১২
১সেই সময় বাদশাহ হেরোদ জুলুম করার জন্য কওমের কয়েকজনকে ধরে এনেছিলেন। ২তিনি হযরত ইউহোন্না রা.-র ভাই হযরত ইয়াকুব রা.-কে তরবারি ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৩
১ আন্তিয়খিয়ার অনুসারীদের মধ্যে কয়েকজন ওলি ও শিক্ষক ছিলেন। তাদের নাম হযরত বার্নবাস র., হযরত নিগের র. নামে পরিচিত সিমোন, ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৪
১ইকোনিয়ম শহরেও একই ঘটনা ঘটলো। সেখানে হযরত পৌল রা. ও হযরত বার্নবাস র. ইহুদিদের সিনাগোগে গিয়ে এমনভাবে কথা বললেন যে, ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৫
১সেই সময় ইহুদিয়া থেকে কয়েকজন লোক এলেন এবং ভাইদের এই শিক্ষা দিতে লাগলেন যে, “হযরত মুসা আ. এর শরিয়ত মতে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৬
১পরে হযরত পৌল রা. দেব্রা ও লুস্ত্রা শহরে গেলেন। সেখানে হযরত তিমথীয় র. নামে একজন উম্মত থাকতেন। তাঁর মা ছিলেন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৭
১হযরত পৌল রা. ও হযরত সিল র. আমফিপলি ও আপল্লো নিয়া হয়ে থিসালোনিকিতে এসে পৌঁছলেন। সেখানে ইহুদিদের একটি সিনাগোগ ছিলো। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৮
১এরপর হযরত পৌল রা. এথেন্স ছেড়ে করিন্থ শহরে গেলেন। সেখানে আকুইলা নামে এক ইহুদির সংগে তার দেখা হলো, জন্মসূত্রে তিনি ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৯
১আপল্লো যখন করিন্থে ছিলেন, সেই সময় হযরত পৌল রা. সে-সব এলাক ঘুরে ইফিসে এলেন। ২সেখানে তিনি কয়েকজন ইমানদারের দেখা পেলেন। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২০
১গোলমাল থামার পর হযরত পৌল রা. ইমানদারদের ডেকে পাঠালেন। তাঁদের উৎসাহ দেবার পর তাঁদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তিনি মেসিডোনিয়ার ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২১
১তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সোজা কোস দ্বীপে গেলাম। পরদিন আমরা রোডস দ্বীপে এলাম। তারপর সেখান থেকে পাতারা গেলাম। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২২
১“ভাইয়েরা ও পিতারা, এখন নিজের পক্ষে আমার উত্তর শুনুন।” ২তারা তাঁকে ইব্রানী ভাষায় কথা বলতে শুনে একেবারে চুপ হয়ে গেলো।৩তখন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৩
১হযরত পৌল রা. সোজা মহাসভার লোকদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমার ভাইয়েরা, আজ পর্যন্ত আমি আল্লাহর সামনে পরিষ্কার বিবেকে জীবন-যাপন করছি।” ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৪
১পাঁচদিন পরে মহাইমাম অননিয় কয়েকজন ইহুদি বুজুর্গকে ও তর্তুল্লস নামে একজন উকিলকে নিয়ে সেখানে এলেন এবং গভর্নরের কাছে হযরত পৌল ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৫
১ফাস্তুস সেই প্রদেশে আসার তিনদিন পর কৈসরিয়া থেকে জেরুসালেমে গেলেন। ২সেখানে প্রধান ইমামেরা ও নেতারা তার কাছে গিয়ে পৌলের বিরুদ্ধে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৬
১তখন আগ্রিপ্প হযরত পৌল রা.-কে বললেন, “তোমার নিজের পক্ষে কথা বলার জন্য তোমাকে অনুমতি দেয়া গেলো।” ২তখন তিনি হাত বাড়িয়ে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৭
১যখন জাহাজে করে আমাদের ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, তখন হযরত পৌল রা. এবং আরো কয়েকজন বন্দিকে জুলিয়াস নামে সম্রাটের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৮
১,২আমরা নিরাপদে কিনারে পৌঁছে জানতে পারলাম যে, দ্বীপটার নাম মাল্টা। এর অধিবাসীরা আমাদের সংগে খুব দয়া দেখালো। তখন বৃষ্টি আরম্ভ ...