১এক দিন বিকেল তিনটার এবাদতের সময় হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. বায়তুল-মোকাদ্দসে যাচ্ছিলেন। এবং জন্ম থেকেই খোঁড়া এক লোককে সেখানে বয়ে আনা হলো। ২লোকেরা প্রতিদিন তাকে বয়ে এনে বায়তুল-মোকাদ্দসের সুন্দর নামের দরজার কাছে রাখতো, যেনো যারা বায়তুল-মোকাদ্দসে যেতো, সে তাদের কাছে ভিক্ষা চাইতে পারে।
৩হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা.-কে বায়তুল-মোকাদ্দসে ঢুকতে দেখে সে তাদের কাছে ভিক্ষা চাইলো। ৪কিন্তু তাঁরা সোজা তার দিকে তাকালেন এবং বললেন, “আমাদের দিকে তাকাও।” ৫সে তাদের কাছ থেকে কিছু পাবার আশায় তাদের দিকে তাকালো।
৬কিন্তু হযরত সাফওয়ান রা. বললেন, “আমার কাছে সোনা বা রুপা কিছুই নেই কিন্তু যা আছে, তা-ই আমি তোমাকে দিচ্ছি। ৭নাসরতের হযরত ইসা মসিহের নামে উঠে দাঁড়াও ও হাঁটো।” এবং তিনি তার ডান হাত ধরে তাকে তুললেন আর তখনই তার পা ও গোড়ালি শক্ত হলো।
৮সে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো এবং হাঁটতে লাগলো। ৯-১০আর হাঁটতে-হাঁটতে, লাফাতে-লাফাতে এবং আল্লাহর প্রশংসা করতে-করতে তাদের সংগে বায়তুল-মোকাদ্দসে ঢুকলো। সব মানুষ তাকে হাঁটতে ও আল্লাহর প্রশংসা করতে দেখলো। তারা তাকে চিনতে পারলো যে, এ সেই লোক, যে বায়তুল-মোকাদ্দসের সুন্দর নামের দরজার কাছে বসে ভিক্ষা করতো। এবং যা ঘটেছিলো তাতে লোকেরা খুব আশ্চর্য হয়ে গেলো।
১১যখন সে হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. পিছু ছাড়ছিলো না, ১২তখন সমস্ত লোক দৌড়ে হযরত সোলায়মান আ. এর বারান্দায় তাদের কাছে এলো কারণ তারা খুবই আশ্চর্য হয়েছিলো। এই অবস্থা দেখে হযরত সাফওয়ান রা. লোকদের বললেন, “বনি-ইস্রাইলরা, এতে আপনারা অবাক হচ্ছেন কেনো, অথবা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো? যেনো আমরা নিজেদের শক্তিতে বা আল্লাহর প্রতি আমাদের ভক্তির কারণে একে চলার শক্তি দিয়েছি?
১৩হযরত ইব্রাহিম আ., হযরত ইসহাক আ. ও হযরত ইয়াকুব আ.-এর আল্লাহ্, অর্থাৎ আমাদের পূর্ব-পুরুষদের আল্লাহ্ তাঁর গোলাম হযরত ইসা আ.-কে মহিমান্বিত করেছেন, যাঁকে আপনারা অস্বীকার করেছিলেন ও পিলাতের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, যদিও পিলাত তাঁকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন ।
১৪কিন্তু আপনারা পবিত্র ও ন্যায়বান ব্যক্তিকে অস্বীকার করে একজন খুনিকে আপনাদের দিয়ে দিতে বলেছিলেন। ১৫আপনারা জীবনের সেই মালিককে হত্যা করেছেন, যাঁকে আল্লাহ মৃত থেকে জীবিত করে তুলেছেন। আর আমরা তার সাক্ষী।
১৬এই যে লোকটিকে আপনারা দেখছেন এবং তাকে আপনারা চেনেন, হযরত ইসা আ. এর ওপর ইমান ও তাঁর নামের গুণে সে শক্তি লাভ করেছে, এবং আপনাদের সামনে কেবল তাঁরই নামে সে স¤পূর্ণভাবে সুস্থ ও সুন্দর স্বাস্থ্য লাভ করেছে। ১৭এখন ভাইয়েরা, আমি জানি, আপনারা আপনাদের নেতাদের মতো না-বুঝেই এ-কাজ করেছেন। ১৮এভাবে আল্লাহ্ অনেক দিন আগে সমস্ত নবির মধ্যদিয়ে যা বলেছিলেন, তা পূর্ণ করেছেন যে, তাঁর মসিহকে কষ্টভোগ করতে হবে। ১৯তাই তওবা করুন এবং আল্লাহর দিকে ফিরুন, যেনো আপনাদের গুনাহ্ মুছে ফেলা হয়। ২০আর এতে যেনো আল্লাহ্ সেই মসিহকে, অর্থাৎ হযরত ইসা আ.কে পাঠিয়ে দিয়ে আপনাদের সজীব করে তুলতে পারেন। আপনাদের জন্য তাঁকেই নিযুক্ত করা হয়েছে।
২১আল্লাহ্ সবকিছু যে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন, তা অনেক দিন আগেই পবিত্র নবিদের মধ্যদিয়ে বলেছিলেন। তিনি যতদিন না তাঁর সেই কথা পূর্ণ করেন, ততদিন পর্যন্ত হযরত ইসা আ.কে বেহেস্তেই থাকতে হবে।
২২হযরত মুসা আ. বলেছিলেন, ‘তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্ তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকেই তোমাদের জন্য আমার মতো একজন নবি উঠাবেন। তিনি তোমাদের যা বলবেন, তা তোমরা অবশ্যই মানবে। ২৩যারা সেই নবির কথা মানবে না, তাদের প্রত্যেককে তার লোকদের মধ্য থেকে একেবারে ধ্বংস করা হবে।’ ২৪এবং হযরত সামুয়েল আ. থেকে আরম্ভ করে যত নবি কথা বলেছেন, তারা এই দিনের কথাই বলেছেন।
২৫আপনারা নবিদের বংশধর এবং আপনাদের পূর্বপুরুষ হযরত ইব্রাহিম আ. এর সংগে আল্লাহ্ ওয়াদার ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন, ‘তোমার বংশের মধ্যদিয়ে দুনিয়ার সমস্ত জাতিই রহমত পাবে।’ ২৬যখন আল্লাহ্ তাঁর গোলামকে পাঠালেন, তখন তিনি প্রথমে তাঁকে আপনাদের কাছে পাঠালেন, যেনো আপনাদেরকে খারাপ পথ থেকে ফিরিয়ে রহমত করতে পারেন।”
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১
১,২মাননীয় থিয়ফিল, হযরত ইসা আ.কে বেহেস্তে তুলে নেবার আগ পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন, তার সমস্তই আমি আগের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২
১পঞ্চাশতম দিনের ইদে যখন তারা সবাই এক জায়গায় মিলিত হলেন, ২তখন হঠাৎ আসমান থেকে জোর বাতাসের শব্দের মতো একটি শব্দ ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৩
১এক দিন বিকেল তিনটার এবাদতের সময় হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. বায়তুল-মোকাদ্দসে যাচ্ছিলেন। এবং জন্ম থেকেই খোঁড়া এক ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৪
১হযরত সাফওয়ান রা. ও হযরত ইউহোন্না রা. যখন লোকদের সংগে কথা বলছিলেন, তখন ইমামেরা, বায়তুল-মোকাদ্দসের প্রধান কর্মচারী ও সদ্দুকিরা তাদের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৫
১আনানিয়াস নামে এক লোক ও তার স্ত্রী সাফিরা একটি সম্পত্তি বিক্রি করলো। ২তার স্ত্রীর জানা মতেই বিক্রির কিছু টাকা সে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৬
১ঐ দিনগুলোতে যখন উম্মতদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিলো, তখন গ্রীকরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলো যে, প্রতিদিন খাবার বিতরণের সময় তাদের বিধবাদের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৭
১তখন প্রধান ইমাম হযরত স্তিফান র.কে জিজ্ঞেস করলেন, “এসব কি সত্যি?”২হযরত স্তিফান র. উত্তর দিলেন, “হে আমার ভাইয়েরা ও আমার ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৮
১ হযরত শৌল রা. তাকে হত্যার অনুমোদন দিচ্ছিলেন।সেদিন জেরুসালেমে হযরত ইসা আ. এর অনুসারীদের ওপরে ভীষণ জুলুম শুরু হলো। তাতে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ৯
১-২এদিকে হযরত শৌল রা. হযরত ইসা মসিহের উম্মতদের হত্যা করার ভয় দেখাচ্ছিলেন।তিনি মহা-ইমামের কাছে গিয়ে দামেস্ক শহরের সিনাগোগগুলোতে দেবার জন্য ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১০
১কৈসরিয়া শহরে কর্নেলিয়াস নামে একজন লোক ইতালিয় সৈন্যদলের লেফটেন্যান্ট ছিলেন। ২তিনি আল্লাহ্ভক্ত ছিলেন এবং তিনি ও তার পরিবারের সবাই আল্লাহর ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১১
১অইহুদিরাও যে আল্লাহর কালামের ওপর ইমান এনেছেন, সে-কথা হাওয়ারিরা এবং সমস্ত ইহুদিয়ার ইমানদার ভাইয়েরা শুনলেন। ২এ-জন্য হযরত সাফওয়ান রা. যখন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১২
১সেই সময় বাদশাহ হেরোদ জুলুম করার জন্য কওমের কয়েকজনকে ধরে এনেছিলেন। ২তিনি হযরত ইউহোন্না রা.-র ভাই হযরত ইয়াকুব রা.-কে তরবারি ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৩
১ আন্তিয়খিয়ার অনুসারীদের মধ্যে কয়েকজন ওলি ও শিক্ষক ছিলেন। তাদের নাম হযরত বার্নবাস র., হযরত নিগের র. নামে পরিচিত সিমোন, ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৪
১ইকোনিয়ম শহরেও একই ঘটনা ঘটলো। সেখানে হযরত পৌল রা. ও হযরত বার্নবাস র. ইহুদিদের সিনাগোগে গিয়ে এমনভাবে কথা বললেন যে, ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৫
১সেই সময় ইহুদিয়া থেকে কয়েকজন লোক এলেন এবং ভাইদের এই শিক্ষা দিতে লাগলেন যে, “হযরত মুসা আ. এর শরিয়ত মতে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৬
১পরে হযরত পৌল রা. দেব্রা ও লুস্ত্রা শহরে গেলেন। সেখানে হযরত তিমথীয় র. নামে একজন উম্মত থাকতেন। তাঁর মা ছিলেন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৭
১হযরত পৌল রা. ও হযরত সিল র. আমফিপলি ও আপল্লো নিয়া হয়ে থিসালোনিকিতে এসে পৌঁছলেন। সেখানে ইহুদিদের একটি সিনাগোগ ছিলো। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৮
১এরপর হযরত পৌল রা. এথেন্স ছেড়ে করিন্থ শহরে গেলেন। সেখানে আকুইলা নামে এক ইহুদির সংগে তার দেখা হলো, জন্মসূত্রে তিনি ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ১৯
১আপল্লো যখন করিন্থে ছিলেন, সেই সময় হযরত পৌল রা. সে-সব এলাক ঘুরে ইফিসে এলেন। ২সেখানে তিনি কয়েকজন ইমানদারের দেখা পেলেন। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২০
১গোলমাল থামার পর হযরত পৌল রা. ইমানদারদের ডেকে পাঠালেন। তাঁদের উৎসাহ দেবার পর তাঁদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তিনি মেসিডোনিয়ার ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২১
১তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সোজা কোস দ্বীপে গেলাম। পরদিন আমরা রোডস দ্বীপে এলাম। তারপর সেখান থেকে পাতারা গেলাম। ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২২
১“ভাইয়েরা ও পিতারা, এখন নিজের পক্ষে আমার উত্তর শুনুন।” ২তারা তাঁকে ইব্রানী ভাষায় কথা বলতে শুনে একেবারে চুপ হয়ে গেলো।৩তখন ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৩
১হযরত পৌল রা. সোজা মহাসভার লোকদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমার ভাইয়েরা, আজ পর্যন্ত আমি আল্লাহর সামনে পরিষ্কার বিবেকে জীবন-যাপন করছি।” ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৪
১পাঁচদিন পরে মহাইমাম অননিয় কয়েকজন ইহুদি বুজুর্গকে ও তর্তুল্লস নামে একজন উকিলকে নিয়ে সেখানে এলেন এবং গভর্নরের কাছে হযরত পৌল ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৫
১ফাস্তুস সেই প্রদেশে আসার তিনদিন পর কৈসরিয়া থেকে জেরুসালেমে গেলেন। ২সেখানে প্রধান ইমামেরা ও নেতারা তার কাছে গিয়ে পৌলের বিরুদ্ধে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৬
১তখন আগ্রিপ্প হযরত পৌল রা.-কে বললেন, “তোমার নিজের পক্ষে কথা বলার জন্য তোমাকে অনুমতি দেয়া গেলো।” ২তখন তিনি হাত বাড়িয়ে ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৭
১যখন জাহাজে করে আমাদের ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, তখন হযরত পৌল রা. এবং আরো কয়েকজন বন্দিকে জুলিয়াস নামে সম্রাটের ...
হাওয়ারিনামা: রুকু – ২৮
১,২আমরা নিরাপদে কিনারে পৌঁছে জানতে পারলাম যে, দ্বীপটার নাম মাল্টা। এর অধিবাসীরা আমাদের সংগে খুব দয়া দেখালো। তখন বৃষ্টি আরম্ভ ...