অডিও শুনতে এখানে ক্লিক করুন
রুকু ২১
১তারা জেরুসালেমের কাছে জৈতুন পাহাড়ের বৈতফগি গ্রামে এলে হযরত ইসা আ. তাঁর দু’জন হাওয়ারিকে এই বলে পাঠিয়ে দিলেন, “তোমরা সামনের গ্রামে যাও।
২গ্রামে ঢোকার সাথে সাথে সেখানে বাঁধা অবস্থায় একটি গাধা দেখতে পাবে এবং একটি বাচ্চাও তার সাথে আছে। তাদের খুলে আমার কাছে নিয়ে এসো। ৩যদি তোমাদের কেউ কিছু বলে, তাহলে শুধু বলো, ‘এগুলোকে হুজুরের দরকার আছে,’ তিনি এগুলো তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে দেবেন।”
৪এমন হলো যেনো নবির মধ্য দিয়ে বলা একথা পূর্ণ হয়- ৫“তোমরা সিয়োন-কন্যাকে বলো, ‘দেখো, তোমার বাদশা তোমার কাছে আসছেন। তিনি নম্র এবং গাধার ওপর বসা, বাচ্চা-গাধার ওপর বসা।’”
৬হাওয়ারিদেরকে হযরত ইসা আ. যেমন হুকুম দিয়েছিলেন, তারা গিয়ে তেমনই করলেন। ৭তারা সেই গাধা ও বাচ্চা-গাধাটি আনলেন এবং তাদের গায়ের চাদর তার ওপর পেতে দিলেন। অতঃপর তিনি তার ওপর উঠে বসলেন। ৮অনেকে তাদের গায়ের চাদর রাস্তার ওপর বিছিয়ে দিলো। অন্যেরা গাছপালা থেকে ডাল কেটে এনে পথের ওপর বিছিয়ে দিলো। ৯জনতা, যারা তাঁর সামনে ও পেছনে যাচ্ছিলো, চিৎকার করে বলতে লাগলো- “হোশান্না দাউদ-সন্তান! আল্লাহর নামে যিনি আসছেন, তিনি রহমতপ্রাপ্ত! জান্নাতুল ফেরদাউসেও হোশান্না!”
১০অতঃপর তিনি জেরুসালেমে ঢোকার পর সারাটা শহরে হৈচৈ পড়ে গেলো। সকলে জিজ্ঞেস করতে লাগলো, “ইনি কে?” ১১জনতা বলতে থাকলো, “ইনি গালিলের নাসরত গ্রামের নবি ইসা ইবনে মরিয়ম।”
১২অতঃপর হযরত ইসা আ. বায়তুল-মোকাদ্দসে ঢুকলেন এবং সেখানে যারা বেচাকেনা করছিলো, তাদের তাড়িয়ে দিলেন। তিনি টাকা বদলকারী ও কবুতর বিক্রেতাদের টেবিল উল্টে ফেললেন। তিনি তাদের বললেন, ১৩“লেখা আছে, ‘আমার ঘরকে এবাদতের ঘর বলা হবে,’ কিন্তু তোমরা এটাকে ডাকাতের আড্ডাখানা করে তুলেছো!”
১৪অতঃপর অন্ধ ও খোঁড়ারা বায়তুল-মোকাদ্দসের ভেতর হযরত ইসা আ.র কাছে এলো আর তিনি তাদের সুস্থ করলেন। ১৫কিন্তু প্রধান ইমামেরা ও আলিমরা তাঁর আশ্চর্যকাজ দেখে এবং বায়তুল-মোকাদ্দসের ভেতর ছেলেমেয়েদের চিৎকার করে “হোশান্না দাউদ-সন্তান” বলতে শুনে রেগে গেলেন,
১৬এবং তাঁকে বললেন, “এরা যা বলছে তা কি তুমি শুনতে পাচ্ছো?” হযরত ইসা আ. তাদের বললেন, “হ্যাঁ। তোমরা কি কখনো পড়োনি- ‘ছোটো ছেলেমেয়ে এবং শিশুদের মুখেই তুমি তোমার নিজের প্রশংসার ব্যবস্থা করেছো’?”
১৭অতঃপর তিনি তাদের ছেড়ে শহরের বাইরে বেথানিয়া গ্রামে গেলেন এবং সেখানেই রাত কাটালেন। ১৮পরদিন সকালে শহরে ফেরার সময় তাঁর খিদে পেলো। ১৯পথের পাশে একটি ডুমুরগাছ দেখে তিনি তার কাছে গেলেন কিন্তু তাতে পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না। তখন তিনি গাছটিকে বললেন, “তোমাতে আর কখনো ফল না ধরুক।” আর তখনই ডুমুরগাছটি শুকিয়ে গেলো। ২০হাওয়ারিরা তা দেখে অবাক হয়ে বললেন, “এতো তাড়াতাড়ি কেমন করে ডুমুরগাছটি শুকিয়ে গেলো!”
২১উত্তরে হযরত ইসা আ. তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমাদের যদি ইমান থাকে এবং তোমরা সন্দেহ না করো, তাহলে ডুমুরগাছের ওপর যা করা হয়েছে, তোমরা যে শুধু তা-ই করবে এমন নয়, বরং তোমরা যদি এই পাহাড়টিকে বলো, ‘উঠে সাগরে গিয়ে পড়ো,’ তাহলে তা-ই হবে। ২২মোনাজাতের সময় তোমরা বিশ্বাস করে যা-কিছু চাবে, তোমরা তা-ই পাবে।”
২৩অতঃপর তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসে এসে যখন শিক্ষা দিচ্ছিলেন, তখন প্রধান ইমামেরা ও সমাজের বুজুর্গরা তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, “কোন অধিকারে তুমি এসব করছো? কে তোমাকে এ-অধিকার দিয়েছে?” ২৪উত্তরে হযরত ইসা আ. তাদের বললেন, “আমিও তোমাদের একটি প্রশ্ন করবো, যদি তোমরা আমাকে উত্তর দাও, তাহলে আমিও তোমাদের বলবো, আমি কোন অধিকারে এসব করছি। ২৫বলোতো, হযরত ইয়াহিয়া আ. বায়াত দেবার অধিকার আল্লাহ, নাকি মানুষের কাছ থেকে পেয়েছিলেন?” তারা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করলেন, “যদি আমরা বলি, আল্লাহর কাছ থেকে,’ তাহলে সে আমাদের বলবে, ‘তাহলে আপনারা তার ওপর ইমান আনেননি কেনো?’ ২৬আবার যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে’, তাহলে লোকদের কাছ থেকে আমাদের ভয় আছে; কারণ সকলে হযরত ইয়াহিয়া আ.কে একজন নবি বলেই মানে।”
২৭সুতরাং তারা হযরত ইসা আ.কে উত্তর দিলেন, “আমরা জানি না।” এবং তিনি তাদের বললেন, “তাহলে আমিও তোমাদের বলবো না, কোন অধিকারে আমি এসব করছি।
২৮তোমরা এবিষয়ে কী মনে করো? এক লোকের দুই ছেলে ছিলো। সে তার বড়ো ছেলের কাছে গিয়ে বললো, ‘বাবা, তুমি আজ আঙুরক্ষেতে গিয়ে কাজ করো।’ ২৯উত্তরে সে বললো, ‘আমি পারবো না।’ কিন্তু পরে সে মন ফিরিয়ে কাজে গেলো। ৩০অতঃপর সে অন্য ছেলেটির কাছে গিয়ে একই কথা বললো। উত্তরে সে বললো, ‘যাচ্ছি, বাবা।’ কিন্তু সে গেলো না। ৩১এই দুই ছেলের মধ্যে কে তাদের বাবার ইচ্ছা পালন করলো?” তারা বললেন, “প্রথমজন।” হযরত ইসা আ. তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, কর-আদায়কারী এবং বেশ্যারা তোমাদের আগেই আল্লাহর রাজ্যে ঢুকছে। ৩২কারণ দীনের পথ ধরেই হযরত ইয়াহিয়া আ. আপনাদের কাছে এসেছিলেন আর আপনারা তার কথায় ইমান আনেননি। কর-আদায়কারী ও বেশ্যারা তার ওপর ইমান এনেছিলো, এটি দেখেও আপনারা তওবা করে তার ওপর ইমান আনেননি।
৩৩আরেকটি দৃষ্টান্ত শুনুন- ‘কোনো এক জমিদার একটি আঙুরক্ষেত করে তার চারদিকে বেড়া দিলো। আঙুর থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য একটি গর্ত খুঁড়লো এবং একটি উঁচু পাহারা ঘর তৈরি করলো। তারপর চাষীদের কাছে ক্ষেতটি বর্গা দিয়ে বিদেশে চলে গেলো।
৩৪ফসল কাটার সময় সে আঙুরের ভাগ নিয়ে আসার জন্য তার গোলামদের সেই চাষীদের কাছে পাঠিয়ে দিলো। ৩৫কিন্তু চাষীরা তার গোলামদের ধরে একজনকে মারধর করলো, একজনকে হত্যা করলো এবং অন্য আরেকজনকে পাথর মারলো। ৩৬অতঃপর সে প্রথমবারের চেয়ে আরো বেশি গোলাম পাঠিয়ে দিলো কিন্তু তারা তাদের সাথেও একইরকম ব্যবহার করলো।
৩৭শেষে সে তার ছেলেকে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিলো। ভাবলো, ‘তারা অন্তত আমার ছেলেকে সম্মান করবে।’ ৩৮কিন্তু সেই চাষীরা ছেলেকে দেখে এই বলে পরামর্শ করতে লাগলো, ‘এ-ই তো উত্তরাধিকারী। ৩৯চলো, আমরা ওকে হত্যা করি, তাহলে আমরাই তার মালিকানা পেয়ে যাবো।’ সুতরাং তারা তাকে ধরে আঙুরক্ষেতের বাইরে ফেলে দিলো এবং হত্যা করলো। ৪০তাহলে আঙুরক্ষেতের মালিক যখন আসবে, তখন সে সেই চাষীদের কী করবে?” ৪১তারা তাঁকে বললেন, “তিনি সেই দুষ্টদের শোচনীয় মৃত্যু ঘটাবেন এবং যে-চাষীরা তাকে সময়মতো ফসলের ভাগ দেবে, তাদের কাছেই সেই আঙুরক্ষেতটি বর্গা দেবেন।”
৪২হযরত ইসা আ. তাদের বললেন, “আপনারা কি পাককিতাবে পড়েননি– ‘রাজমিস্ত্রিরা যে-পাথরটি বাতিল করে দিয়েছিলো, সেটিই কোণের প্রধান-পাথর হয়ে উঠলো। এটি ছিলো আল্লাহর কাজ, আর তা আমাদের চোখে খুব আশ্চর্য লাগে?’ ৪৩এজন্য আমি তোমাদের বলছি, আল্লাহর রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং এমন এক জাতিকে তা দেয়া হবে, যে-জাতি সে-রাজ্যের ফল ধরাবে। ৪৪যে এই পাথরের ওপর পড়বে, সে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে এবং এটি যার ওপর পড়বে, সে চুরমার হয়ে যাবে।”
৪৫প্রধান ইমামেরা এবং ফরিসিরা তাঁর দৃষ্টান্তগুলো শুনে বুঝতে পারলেন যে, তিনি তাদের বিষয়েই কথা বলছেন। ৪৬তখন তারা তাঁকে বন্দি করতে চাইলেন; কিন্তু তারা জনতার ভয়ে ভীত ছিলেন, কারণ তারা তাঁকে নবি বলে মানতো।
রুকু ২২
১আবারো হযরত ইসা আ. তাদের সাথে দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বললেন। ২তিনি বললেন, “বেহেস্তি রাজ্যকে এমন একজন বাদশার সাথে তুলনা করা যেতে পারে, যিনি তার ছেলের বিয়েভোজের আয়োজন করলেন।
৩ভোজে দাওয়াত দেয়া লোকদের ডেকে আনার জন্য তিনি তার গোলামদের পাঠিয়ে দিলেন কিন্তু তারা আসতে চাইলো না। ৪তখন তিনি আবার অন্য গোলামদের পাঠালেন। বললেন, ‘যারা দাওয়াত পেয়েছে তাদের গিয়ে বলো, ‘দেখুন, আমি আমার ভোজ প্রস্তুত করেছি। ষাঁড় ও মোটাসোটা বাছুরগুলো জবাই করা হয়েছে। সবকিছুই প্রস্তুত। আপনারা বিয়েভোজে আসুন’।
৫কিন্তু তারা এদেরকে গুরুত্ব না দিয়ে কেউ তার নিজের খামারে, আবার কেউ-বা তার নিজের কাজে চলে গেলো। ৬বাকিরা তার গোলামদের ধরে অপমান ও হত্যা করলো। ৭এতে বাদশা খুব রেগে গেলেন। তিনি তার সৈন্য পাঠিয়ে সেই খুনীদের ধ্বংস করলেন এবং তাদের শহর পুড়িয়ে দিলেন।
৮অতঃপর তিনি তার গোলামদের বললেন, ‘বিয়েভোজ প্রস্তুত কিন্তু ওই দাওয়াতিরা যোগ্য ছিলো না। ৯সুতরাং তোমরা বরং রাস্তার মোড়ে মোড়ে যাও এবং যতো মানুষের দেখা পাবে, তাদের প্রত্যেককে বিয়েভোজে ডেকে আনবে।’ ১০তখন ওই গোলামরা বাইরে রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে ভালোমন্দ যাদেরই পেলো, তাদের প্রত্যেককে একত্রিত করলো। ফলে বিয়ে বাড়িটি মেহমানে ভরে গেলো।
১১অতঃপর বাদশা মেহমানদের দেখার জন্য ভেতরে এসে দেখলেন, এক লোক বিয়েভোজের পোশাক পরেনি। ১২তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বন্ধু, বিয়েভোজের পোশাক ছাড়া তুমি কেমন করে এখানে ঢুকলে?’ সে এর কোনো উত্তরই দিতে পারলো না। ১৩তখন বাদশা কাজের লোকদের বললেন, ‘এর হাতপা বেঁধে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও। সেখানে সে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে।’ ১৪কারণ অনেককে ডাকা হয়েছে কিন্তু অল্পসংখ্যকই মনোনীত।”
১৫তখন ফরিসিরা চলে গেলেন এবং কীভাবে তাঁকে তাঁর কথার ফাঁদে ফেলা যায়, সেই ষড়যন্ত্র করতে লাগলেন। ১৬তারা হেরোদীয়দের সাথে নিজেদের অনুসারীদের মাধ্যমে তাঁর কাছে বলে পাঠালেন- “হুজুর, আমরা জানি, আপনি একজন সৎলোক। আপনি সঠিকভাবে আল্লাহর পথের বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। মানুষ কি মনে করবে বা না করবে, তাতে আপনার কিছু যায় আসে না; কারণ আপনি কারো মুখ চেয়ে কিছু করেন না।
১৭আপনি কী মনে করেন? আমাদের বলুন- কাইসারকে কর দেয়া কি বৈধ?” ১৮হযরত ইসা আ. তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে বললেন, “ভন্ডের দল, কেনো আমাকে পরীক্ষা করছো? ১৯কর দেবার পয়সা আমাকে দেখাও।” তারা তাঁর কাছে একটি দিনার নিয়ে এলো।
২০অতঃপর তিনি তাদের বললেন, “এর ওপর এই ছবি ও নাম কার?” ২১তারা বললো, “কাইসারের।” তিনি তাদের বললেন, “যা কাইসারের তা কাইসারকে দাও, আর যা আল্লাহর তা আল্লাহকে দাও।” ২২একথা শুনে তারা অবাক হলো এবং তাঁকে ছেড়ে চলে গেলো।
২৩সেই একই দিনে সদ্দুকিরা- যারা বলেন, পুনরুত্থান বলে কিছু নেই, তারা তাঁর কাছে এলেন
২৪এবং তাঁকে প্রশ্ন করে বললেন, “হুজুর, হযরত মুসা আ. বলেছেন, ‘যদি কেউ সন্তানহীন অবস্থায় মারা যায়, তাহলে তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করবে এবং ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা করবে।’ ২৫আমাদের মাঝে সাত ভাই ছিলো। প্রথমজন বিয়ে করলো, সন্তানহীন অবস্থায় মারা গেলো এবং তার ভাইয়ের জন্য সেই বিধবাকে রেখে গেলো। ২৬এভাবে দ্বিতীয় থেকে সপ্তমজন পর্যন্ত প্রত্যেকে একই কাজ করলো। ২৭সবশেষে সেই মহিলাও মারা গেলো। ২৮কেয়ামতের দিন ওই সাতজনের মধ্যে সে কার স্ত্রী হবে? কারণ তারা প্রত্যেকেই তো তাকে বিয়ে করেছিলো।”
২৯হযরত ইসা আ. তাদের বললেন, “তোমরা ভুল করছো। কারণ তোমরা আল্লাহর কালাম জানো না এবং আল্লাহর ক্ষমতা স¤পর্কেও জানো না। ৩০মৃতেরা যখন জীবিত হয়ে উঠবে, তখন তারা বিয়েও করবে না এবং তাদের বিয়ে দেয়াও হবে না। তখন তারা হবে বেহেস্তের ফেরেস্তাদের মতো। ৩১মৃতদের জীবিত হয়ে ওঠার বিষয়ে আল্লাহ তোমাদের যেকথা বলেছেন তা কি তোমরা পড়োনি? ৩২‘আমি হযরত ইব্রাহিম আ.র আল্লাহ, হযরত ইসহাক আ.র আল্লাহ ও হযরত ইয়াকুব আ.র আল্লাহ।’ তিনি তো মৃতদের আল্লাহ নন, তিনি জীবিতদেরই আল্লাহ।” ৩৩একথা শুনে লোকেরা তাঁর শিক্ষায় অবাক হলো।
৩৪হযরত ইসা আ. সদ্দুকিদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন শুনে ফরিসিরা একত্রে জড়ো হলেন। ৩৫তাদের মধ্যে একজন আইনজ্ঞ এসে তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য জিজ্ঞেস করলেন, ৩৬“হুজুর, শরিয়তের হুকুমগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ হুকুম কোনটি?” ৩৭তিনি তাকে বললেন, “‘তুমি তোমার স¤পূর্ণ অন্তর, তোমার স¤পূর্ণ মন ও তোমার স¤পূর্ণ প্রাণ দিয়ে তোমার মালিক আল্লাহকে মহব্বত করবে।’- ৩৮এটিই শ্রেষ্ঠ এবং প্রথম হুকুম। ৩৯এবং দ্বিতীয়টি এটিরই মতো- ‘তুমি তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো মহব্বত করবে।’ ৪০এই দুটো হুকুমের ওপরই গোটা শরিয়ত এবং সহিফাগুলো দাঁড়িয়ে আছে।”
৪১ফরিসিরা তখনো দল বেঁধে ছিলেন। হযরত ইসা আ. তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ৪২“মসিহের বিষয়ে তোমরা কী মনে করো? তিনি কার সন্তান?” তারা তাঁকে বললেন, “ হযরত দাউদের সন্তান।” ৪৩তিনি তাদের বললেন, “তাহলে দাউদ আল্লাহর রুহের দ্বারা চালিত হয়ে কীভাবে তাঁকে মনিব বলে ডেকেছিলেন?
তিনি বলেছিলেন- ৪৪‘আল্লাহ আমার মনিবকে বললেন, ‘যতোক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের তলায় রাখি, ততোক্ষণ তুমি আমার ডান দিকে বসো।’ ৪৫হযরত দাউদ আ. নিজেই যখন তাঁকে মনিব বলেছেন, তখন কেমন করে তিনি তাঁর সন্তান হতে পারেন?”
৪৬কেউ তাঁকে কোনো উত্তর দিতে পারলো না এবং সেদিন থেকে কেউ তাঁকে আর কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতেও সাহস করলো না।
Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
রুকু ১ ১হযরত ইসা মসিহের বংশতালিকা- হযরত ইসা মসিহ হযরত দাউদ আ.র বংশধর এবং হযরত দাউদ আ. হযরত ইব্রাহিম আ.র ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১ ও ২
রুকু - ৩ ১ওই সময়ে হযরত ইয়াহিয়া আ. ইহুদিয়ার মরুপ্রান্তরে এসে একথা প্রচার করতে লাগলেন- ২“তওবা করো, কারণ বেহেস্তি রাজ্য ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৩ ও ৪
রুকু ৫ ১জনতার ঢল দেখে হযরত ইসা আ. পাহাড়ের ওপর উঠলেন। তিনি বসার পর তাঁর হাওয়ারিরা তাঁর কাছে এলেন। ২অতঃপর ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৫ ও ৬
রুকু ৭ ১বিচার করো না, তাহলে তোমরাও বিচারের মুখোমুখি হবে না। কারণ যেভাবে তোমরা বিচার করো, সেভাবেই তোমাদের বিচার করা ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৭ ও ৮
রুকু ৯ ১অতঃপর তিনি নৌকায় উঠে লেক পাড়ি দিয়ে তাঁর নিজের শহরে এলেন। ২তখনই কিছু লোক বিছানায় শোয়ানো এক অবশরোগীকে ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৯ ও ১০
রুকু ১১ ১অতঃপর হযরত ইসা আ. তাঁর বারোজন হাওয়ারিকে হুকুম দেয়া শেষ করে নিজে গ্রামে গ্রামে শিক্ষা দিতে ও প্রচার ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ১১ ও ১২
রুকু ১৩ ১ওই দিন হযরত ইসা আ. ঘর থেকে বেরিয়ে লেকের পাড়ে গিয়ে বসলেন। ২তাঁর কাছে এতো লোক এসে জড়ো ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৩ ও ১৪
রুকু ১৫ ১অতঃপর জেরুসালেম থেকে কয়েকজন ফরিসি ও আলিম হযরত ইসা আ.র কাছে এসে বললেন, ২“বুজুর্গদের দেয়া যে-নিয়ম চলে আসছে, ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৫ ও ১৬
রুকু ১৭ ১ছ’দিন পর হযরত ইসা আ. হযরত পিতর রা., হযরত ইয়াকুব রা. ও তার ভাই হযরত ইউহোন্না রা.কে সাথে ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৭ ও ১৮
রুকু ১৯ ১এসব কথা বলা শেষ করে হযরত ইসা আ. গালিল ছেড়ে জর্দান নদীর ওপারে ইহুদিয়ায় গেলেন। ২হাজার হাজার মানুষ ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৯ ও ২০
রুকু ২১ ১তারা জেরুসালেমের কাছে জৈতুন পাহাড়ের বৈতফগি গ্রামে এলে হযরত ইসা আ. তাঁর দু’জন হাওয়ারিকে এই বলে পাঠিয়ে দিলেন, ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২১ ও ২২
রুকু ২৩ ১অতঃপর হযরত ইসা আ. জনতা ও তাঁর সাহাবিদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ২“আলিম ও ফরিসিরা নিজেরাই হযরত মুসা আ.র ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২৩ ও ২৪
রুকু ২৫ ১তখন বেহেস্তি রাজ্য হবে এমন দশ কুমারীর মতো, যারা বরকে বরণ করার জন্য তাদের বাতি নিয়ে বাইরে গেলো। ...
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২৫ ও ২৬
রুকু ২৭ ১ফজরের পরেই প্রধান ইমামেরা ও বুজুর্গরা একত্রে বসে হযরত ইসা আ.কে মেরে ফেলার বিষয়ে আলোচনা করলেন। ২তারা হযরত ...