মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৩ ও ১৪

76369
Total
Visitors
অডিও শুনতে এখানে ক্লিক করুন

রুকু ১৩

১ওই দিন হযরত ইসা আ. ঘর থেকে বেরিয়ে লেকের পাড়ে গিয়ে বসলেন। ২তাঁর কাছে এতো লোক এসে জড়ো হলো যে, তিনি একটি নৌকায় উঠে বসলেন আর সমস্ত লোক পাড়ে দাঁড়িয়ে রইলো। ৩তিনি দৃষ্টান্তের মধ্য দিয়ে তাদেরকে অনেক বিষয়ে বলতে লাগলেন। বললেন, “শোনো, এক চাষী বীজ বুনতে গেলো।

৪বীজ বোনার সময় কতকগুলো বীজ পথের পাশে পড়লো; আর পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেললো। ৫কতকগুলো বীজ পাথুরে জমিতে পড়লো। সেখানে বেশি মাটি ছিলো না। সেগুলো বেশি মাটির নিচে ছিলো না বলে তাড়াতাড়ি চারা গজিয়ে উঠলো। ৬সূর্য ওঠার পর সেগুলো পুড়ে গেলো এবং শিকড় ভালো করে বসেনি বলে শুকিয়ে গেলো। ৭কতকগুলো বীজ কাঁটাবনের মধ্যে পড়লো। কাঁটাগাছ বেড়ে উঠে চারাগুলো চেপে রাখলো। ৮অন্যগুলো ভালো জমিতে পড়লো এবং ফল দিলো- কোনোটিতে একশো গুণ, কোনোটিতে ষাট গুণ আবার কোনোটিতে তিরিশ গুণ। ৯যার শোনার কান আছে, সে শুনুক।”

১০অতঃপর সাহাবিরা কাছে এসে তাঁকে বললেন, “আপনি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে এদের সাথে কথা বলছেন কেনো?” ১১উত্তরে তিনি বললেন, “বেহেস্তি রাজ্যের গোপন বিষয়গুলো তোমাদেরই জানতে দেয়া হয়েছে কিন্তু এদের নয়। ১২কারণ যার আছে তাকে আরো দেয়া হবে আর তাতে তার প্রয়োজনের থেকে বেশি হবে; কিন্তু যার কিছুই নেই, তার যা আছে, তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হবে।

১৩এদের সাথে আমার দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলার কারণ হলো, ‘এরা দেখেও দেখে না, শুনেও শোনে না এবং বোঝেও না।’ ১৪এদের মধ্য দিয়েই ইসাইয়া নবির এই ভবিষ্যদ্বাণী পূর্র্ণ হচ্ছে- ‘তোমরা শুনবে কিন্তু কখনোই বুঝবে না, তোমরা দেখবে কিন্তু কখনোই হৃদয়ঙ্গম করতে পারবে না।

১৫এসব লোকের হৃদয় অসাড় এবং কান বন্ধ হয়ে গেছে আর তারা তাদের চোখও বন্ধ করে রেখেছে; যেনো তারা চোখ দিয়ে না দেখে, কান দিয়ে না শোনে এবং হৃদয় দিয়ে না বোঝে, আর ভালো হওয়ার জন্য আমার কাছে ফিরে না আসে।’

১৬কিন্তু রহমতপ্রাপ্ত তোমাদের চোখ ও তোমাদের কান, কারণ তা দেখতে পায় ও শুনতে পায়। ১৭আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমরা যা দেখছো তা অনেক নবি ও কামিল লোক দেখতে চেয়েও দেখতে পাননি আর তোমরা যা শুনছো তা তারা শুনতে চেয়েও শুনতে পাননি।

১৮অতএব, তোমরা চাষীর গল্পের অর্থ শোনো। ১৯যখন কেউ সে-রাজ্যের কালাম শুনে তা না বোঝে, তখন সেই শয়তান এসে তার অন্তরে যে-কালাম বোনা হয়েছিলো তা কেড়ে নেয়। পথের পাশে পড়া বীজের মধ্য দিয়ে একথাই বুঝানো হয়েছে।

২০পাথুরে জমিতে বোনা বীজের মধ্য দিয়ে তার সম্বন্ধেই বলা হয়েছে, যে সেই কালাম শুনে তখনই আনন্দের সাথে গ্রহণ করে; ২১কিন্তু তার মধ্যে শিকড় ভালো করে বসে না বলে অল্প সময়ের জন্য সে স্থির থাকে। পরে কালামের জন্য যখন কষ্ট এবং অত্যাচার আসে, তখনই সে পিছিয়ে যায়। ২২কাঁটাবনে বোনা বীজের মধ্য দিয়ে তার সম্বন্ধেই বলা হয়েছে, যে সেই কালাম শোনে কিন্তু জাগতিক দুশ্চিন্তা এবং ধন-স¤পত্তির মায়া সেই কালামকে চেপে রাখে; সেজন্য তাতে কোনো ফল ধরে না। ২৩ভালো জমিতে বোনা বীজের মধ্য দিয়ে তার সম্বন্ধেই বলা হয়েছে, যে সেই কালাম শোনে ও বোঝে এবং বাস্তবিকই ফল দেয়। কেউ দেয় একশো গুণ, কেউ দেয় ষাট গুণ আবার কেউ দেয় তিরিশ গুণ।”

২৪তিনি তাদের সামনে আরো একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরলেন- “বেহেস্তি রাজ্যকে এমন এক ব্যক্তির সাথে তুলনা করা চলে, যে নিজের জমিতে ভালো বীজ বুনলো। ২৫কিন্তু সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর তার শত্রু এসে গমের মধ্যে ঘাসের বীজ বুনে চলে গেলো। ২৬সুতরাং গাছগুলো যখন বেড়ে উঠলো এবং তাতে শিষ ধরলো, তখন তার মধ্যে ঘাসও দেখা গেলো। ২৭তখন বাড়ির মালিকের গোলামরা এসে তাকে বললো, ‘মালিক, আপনি কি আপনার জমিতে ভালো বীজ বোনেননি? তাহলে ঘাসগুলো কোথা থেকে এলো?’

২৮সে তাদের বললো, ‘নিশ্চয়ই এটি কোনো শত্রুর কাজ।’ গোলামরা তাকে বললো, ‘তাহলে আপনি কি চান যে, আমরা গিয়ে ওগুলো তুলে ফেলি?’ ২৯তিনি বললেন, ‘না, ঘাসগুলো তুলতে গিয়ে হয়তো তোমরা তার সাথে গমের গাছগুলোও উপড়ে ফেলবে। ৩০ফসল কাটার সময় পর্যন্ত ওগুলোকে একসাথে বেড়ে উঠতে দাও। ফসল কাটার সময় আমি মজুরদের বলবো, প্রথমে ঘাসগুলো তুলে পোড়ানোর জন্য আঁটি আঁটি করে বেঁধে রাখো, তারপর গমগুলো আমার গোলায় জমা করো।’”

৩১তিনি তাদের আরেকটি দৃষ্টান্ত দিলেন, “বেহেস্তি রাজ্য এমন একটি সরিষার মতো, যা এক লোক নিয়ে নিজের জমিতে বুনলো। ৩২সমস্ত বীজের মধ্যে এটি সবচেয়ে ছোটো কিন্তু বেড়ে ওঠার পর তা সমস্ত শাক-সবজির চেয়ে বড়ো হয় এবং এমন একটি গাছ হয়ে ওঠে যে, পাখিরা এসে তার ডালে বাসা বাঁধে।” ৩৩তিনি তাদের আরো একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, “বেহেস্তি রাজ্য খামির মতো, যা কোনো এক মহিলা নিয়ে গিয়ে তিন গুন ময়দার ভেতরে লুকিয়ে রাখলো। এর ফলে সব ময়দাই ফেঁপে উঠলো।”

৩৪হযরত ইসা আ. দৃষ্টান্তের মধ্য দিয়ে এসব বিষয় লোকদের বললেন; দৃষ্টান্ত ছাড়া তিনি তাদের কিছুই বললেন না, ৩৫যেনো নবির মাধ্যমে বলা একথা পূর্র্ণ হয়- “আমি কথা বলার জন্য দৃষ্টান্তের মাধ্যমে আমার মুখ খুলবো। দুনিয়া সৃষ্টির সময় থেকে যা-কিছু লুকোনো আছে, আমি তা ঘোষণা করবো।”

৩৬অতঃপর তিনি লোকদের বিদায় করে ঘরে ঢুকলেন। তাঁর সাহাবিরা এসে তাঁকে বললেন, “ক্ষেতের ওই ঘাসের দৃষ্টান্তটি আমাদের বুঝিয়ে দিন।” ৩৭তিনি উত্তর দিলেন, “যিনি ভালো বীজ বোনেন, তিনি ইবনুল-ইনসান। ৩৮জমি এই দুনিয়া এবং রাজ্যের সন্তানেরা হলো ভালো বীজ। ঘাস হলো মন্দের সন্তানেরা ৩৯এবং যে-শত্রু তা বুনেছিলো, সে হলো ইবলিস। কাটার সময় হলো সময়ের শেষ, ৪০এবং যারা কাটবেন, তারা হচ্ছেন ফেরেস্তা। ঘাস যেমন জড়ো করে আগুনে পোড়ানো হয়, কেয়ামতের দিনে তেমনই হবে।

৪১ইবনুল-ইনসান তাঁর ফেরেস্তাদের পাঠিয়ে দেবেন। তারা তাঁর রাজ্য থেকে সমস্ত গুনাহর কারণগুলো ৪২এবং গুনাহগারদেরকে সংগ্রহ করবেন এবং তাদের জাহান্নামে ফেলে দেবেন।

 ৪৩সেখানে তারা কান্নাকাটি করতে ও দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে। তখন দীনদারেরা তাদের প্রতিপালকের রাজ্যে সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়ে জ্বলবে। যার শোনার কান আছে সে শুনুক!

৪৪বেহেস্তি রাজ্য জমির ভেতর লুকিয়ে রাখা ধনের মতো। এক লোক তা খুঁজে পেয়ে আবার লুকিয়ে রাখলো। তারপর সে আনন্দের সাথে চলে গেলো এবং তার যা-কিছু ছিলো, সব বিক্রি করে এসে সেই জমিটি কিনলো। ৪৫আবার বেহেস্তি রাজ্য এমন এক সওদাগরের মতো, যে ভালো মুক্তা খুঁজছিলো। ৪৬সে একটি মহামূল্যবান মুক্তার খোঁজ পেয়ে ফিরে গিয়ে তার যা-কিছু ছিলো, সব বিক্রি করে সেই মুক্তাটি কিনলো। ৪৭আবার বেহেস্তি রাজ্য এমন একটি জালের মতো, যা লেকে ফেলা হলো এবং তাতে সবরকম মাছ ধরা পড়লো। ৪৮জাল ভরে গেলে লোকেরা তা টেনে কিনারে তুললো এবং বসে ভালো মাছগুলো বেছে বেছে ঝুড়িতে রাখলো, আর খারাপগুলো ফেলে দিলো। ৪৯সুতরাং যুগের শেষে এমনই হবে। ফেরেস্তারা এসে দীনদারদের মধ্য থেকে গুনাহগারদের আলাদা করবেন এবং তাদের জাহান্নামে ফেলে দেবেন। ৫০সেখানে তারা কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে।

৫১তোমরা কি এসব বুঝতে পেরেছো?” তারা উত্তর দিলেন, “জি, হুজুর।” ৫২তিনি তাদের বললেন, “বেহেস্তি রাজ্যের বিষয়ে শিক্ষা পাওয়া প্রত্যেক আলিম এমন একজন গৃহকর্তার মতো, যে তার ভা-ার থেকে নতুন ও পুরোনো জিনিস বের করে।”

৫৩এসব দৃষ্টান্ত দেয়া শেষ করে হযরত ইসা আ. সেই জায়গা থেকে চলে গেলেন। ৫৪তিনি নিজের গ্রামে এলেন এবং তাদের সিনাগোগে গিয়ে লোকদেরকে শিক্ষা দিতে লাগলেন। তারা আশ্চর্য হয়ে বললো, “এই জ্ঞান ও মোজেজা সে কোথা থেকে পেলো? ৫৫এ কি সেই কাঠমিস্ত্রির ছেলে নয়? তার মায়ের নাম কি হযরত মরিয়ম র. নয়? ইয়াকুব, ইউসুফ, সিমোন ও ইহুদা কি তার ভাই নয়? ৫৬এবং তার বোনেরা সবাই কি আমাদের মধ্যে নেই? তাহলে কোথা থেকে সে এসব পেলো?” ৫৭এভাবেই তাঁকে নিয়ে তারা মনে বাধা পেলো। কিন্তু ইসা তাদের বললেন, “নিজের গ্রাম ও নিজের বাড়ি ছাড়া আর সব জায়গাতেই নবিরা সম্মান পান।” ৫৮তাদের অবিশ্বাসের কারণে তিনি সেখানে আর বেশি মোজেজা দেখালেন না।

রুকু ১৪

১সেই সময় বাদশা হেরোদ হযরত ইসা আ.র বিষয়ে শুনতে পেলেন। ২তিনি তার কর্মচারীদের বললেন, “ইনিই সেই নবি হযরত ইয়াহিয়া আ.। তিনি মৃত থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন বলেই এসব মোজেজা দেখাচ্ছেন।”

৩হেরোদ হযরত ইয়াহিয়া আ.কে বন্দি করেছিলেন এবং তাকে বেঁধে জেলে রেখেছিলেন। তিনি তার ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার জন্যই এটি করেছিলেন। ৪কারণ হযরত ইয়াহিয়া আ. তাকে বলতেন, “তাকে বিয়ে করা আপনার জন্য শরিয়ত-সম্মত নয়।” ৫হেরোদ তাকে হত্যা করতে চাইলেও লোকদের ভয় করতেন; কারণ লোকেরা তাকে নবি বলে মানতো।

৬হেরোদের জন্মদিনে হেরোদিয়ার মেয়ে মেহমানদের সামনে নাচলো এবং সে হেরোদকে সন্তুষ্ট করলো। ৭সেজন্য হেরোদ কসম খেয়ে ওয়াদা করলেন যে, সে যা চাইবে তিনি তাকে তা-ই দেবেন। ৮মায়ের কাছ থেকে কুপরামর্শ পেয়ে সে বললো, “আমাকে থালায় করে হযরত ইয়াহিয়া আ.-র মাথাটা এখানে এনে দিন।” ৯বাদশা তার কসমের কথা ভেবে দুঃখিত হলেন এবং মেহমানদের সামনে ওয়াদা করার কারণে তিনি তাকে তা দিতে হুকুম দিলেন। ১০তিনি লোক পাঠিয়ে জেলখানার মধ্যেই হযরত ইয়াহিয়া আ.-র মাথা কাটালেন। ১১মাথাটি থালায় করে এনে মেয়েটিকে দেয়া হলো এবং সে তা তার মায়ের কাছে নিয়ে গেলো। ১২তার সাহাবিরা এসে দেহমোবারকটি নিয়ে গিয়ে দাফন করলেন। অতঃপর তারা গিয়ে হযরত ইসা আ.কে জানালেন।

১৩এই খবর শুনে হযরত ঈসা আ. সেই জায়গা ছেড়ে নৌকায় করে একাকী একটি নির্জন জায়গায় চলে গেলেন। লোকেরা তা জানতে পেরে বিভিন্ন গ্রাম থেকে পায়ে হেঁটে তাঁর অনুসরণ করতে লাগলো। ১৪পাড়ে এসে নৌকা থেকে নেমে তিনি প্রচুর লোক দেখতে পেলেন। তাদের প্রতি তাঁর মমতা হলো এবং তিনি তাদের রোগীদের সুস্থ করলেন।

১৫দিনের শেষে হাওয়ারিরা এসে তাঁকে বললেন, “জায়গাটি নির্জন, বেলাও প্রায় ডুবে গেছে; এদের বিদায় দিন, যেনো এরা গ্রামগুলোতে গিয়ে নিজেদের জন্য খাবার কিনতে পারে।” ১৬হযরত ইসা আ. তাদের বললেন, “ওদের যাবার দরকার নেই, তোমরাই ওদের কিছু খেতে দাও।” ১৭তারা বললেন, “এখানে আমাদের কাছে পাঁচটি রুটি ও দুটো মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই।”

১৮তিনি বললেন, “ওগুলো আমার কাছে আনো।” ১৯অতঃপর তিনি লোকদের ঘাসের ওপর বসতে হুকুম দিলেন। তিনি সেই পাঁচটি রুটি আর দুটো মাছ নিয়ে আসমানের দিকে তাকিয়ে শুকরিয়া জানালেন, তারপর রুটি ভেঙে হাওয়ারিদের হাতে দিলেন আর হাওয়ারিরা তা লোকদের দিলেন। ২০সকলে খেলো এবং সন্তুষ্ট হলো। তারা পড়ে থাকা টুকরোগুলো কুড়িয়ে নিলেন আর তাতে বারোটি ঝুড়ি পূর্র্ণ হলো। ২১যারা খেয়েছিলো, মহিলা ও শিশু বাদে, তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ছিলো প্রায় পাঁচ হাজার।

২২তখনই তিনি হাওয়ারিদের বললেন যেনো তারা নৌকায় করে তাঁর আগে ওপারে যান। এদিকে তিনি লোকদের বিদায় করতে লাগলেন। ২৩লোকদের বিদায় করে মোনাজাত করার জন্য তিনি একা পাহাড়ে উঠে গেলেন। যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো, তখনো তিনি সেখানে একাই রইলেন।

২৪ততোক্ষণে নৌকাটি পাড় থেকে অনেকটা দূরে চলে গিয়েছিলো এবং ঢেউগুলো নৌকার ওপর বারবার আছড়ে পড়ছিলো; কারণ বাতাস তাদের উল্টো দিক থেকে আসছিলো। ২৫প্রায় শেষ রাতের দিকে তিনি পানির ওপর দিয়ে হেঁটে তাদের কাছে এলেন। ২৬হাওয়ারিরা তাঁকে পানির ওপর দিয়ে হাঁটতে দেখে ভয় পেয়ে বললেন, “এ তো ভূত!” এবং ভয়ে চিৎকার করে উঠলেন। ২৭তখনই হযরত ইসা আ. তাদের সাথে কথা বললেন। তিনি বললেন, “সাহস করো, এ তো আমি; ভয় করো না।”

২৮পিতর তাঁকে বললেন, “হুজুর, যদি আপনিই হন, তাহলে আমাকে হুকুম দিন, যেনো আমি পানির ওপর দিয়ে হেঁটে আপনার কাছে আসতে পারি।” ২৯তিনি বললেন, “এসো।” অতঃপর পিতর নৌকা থেকে নেমে পানির ওপর দিয়ে হেঁটে হযরত ইসা আ.-র দিকে চললেন। ৩০কিন্তু বাতাস দেখে তিনি ভয় পেলেন এবং ডুবে যেতে যেতে চিৎকার করে বললেন, “হুজুর, আমাকে বাঁচান!” ৩১হযরত ইসা আ. তখনই হাত বাড়িয়ে তাকে ধরলেন এবং বললেন, “এতো অল্প তোমার ইমান! কেনো সন্দেহ করলে?” ৩২অতঃপর তারা নৌকায় উঠলে বাতাস থেমে গেলো। ৩৩যারা নৌকায় ছিলেন, তারা নতজানু হয়ে তাঁকে বললেন, “সত্যিই আপনি আল্লাহর একান্ত প্রিয় মনোনীতজন।”

৩৪অতঃপর তারা লেক পার হয়ে গিনেসরতে এলেন।

৩৫সেখানকার লোকেরা তাঁকে চিনতে পেরে এলাকার সব জায়গায় খবর পাঠালো ও সমস্ত রোগীদের তাঁর কাছে আনলো। ৩৬এবং তাঁর কাছে কাকুতি-মিনতি করতে লাগলো, যেনো তারা তাঁর চাদরের ঝালরটি হলেও ছুঁতে পারে। আর যারা তা ছুঁলো তারা সকলেই সুস্থ হলো।

Facebook
WhatsApp
Telegram
Email
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১ ও ২
রুকু ১ ১হযরত ইসা মসিহের বংশতালিকা- হযরত ইসা মসিহ হযরত দাউদ আ.র বংশধর এবং হযরত দাউদ আ. হযরত ইব্রাহিম আ.র ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১ ও ২

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু - ৩ ও ৪
রুকু - ৩ ১ওই সময়ে হযরত ইয়াহিয়া আ. ইহুদিয়ার মরুপ্রান্তরে এসে একথা প্রচার করতে লাগলেন- ২“তওবা করো, কারণ বেহেস্তি রাজ্য ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৩ ও ৪

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু - ৫ ও ৬
রুকু ৫ ১জনতার ঢল দেখে হযরত ইসা আ. পাহাড়ের ওপর উঠলেন। তিনি বসার পর তাঁর হাওয়ারিরা তাঁর কাছে এলেন। ২অতঃপর ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৫ ও ৬

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৭ ও ৮
রুকু ৭ ১বিচার করো না, তাহলে তোমরাও বিচারের মুখোমুখি হবে না। কারণ যেভাবে তোমরা বিচার করো, সেভাবেই তোমাদের বিচার করা ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৭ ও ৮

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৯ ও ১০
রুকু ৯ ১অতঃপর তিনি নৌকায় উঠে লেক পাড়ি দিয়ে তাঁর নিজের শহরে এলেন। ২তখনই কিছু লোক বিছানায় শোয়ানো এক অবশরোগীকে ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ৯ ও ১০

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু - ১১ ও ১২
রুকু ১১ ১অতঃপর হযরত ইসা আ. তাঁর বারোজন হাওয়ারিকে হুকুম দেয়া শেষ করে নিজে গ্রামে গ্রামে শিক্ষা দিতে ও প্রচার ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু – ১১ ও ১২

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৩ ও ১৪
রুকু ১৩ ১ওই দিন হযরত ইসা আ. ঘর থেকে বেরিয়ে লেকের পাড়ে গিয়ে বসলেন। ২তাঁর কাছে এতো লোক এসে জড়ো ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৩ ও ১৪

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৫ ও ১৬
রুকু ১৫ ১অতঃপর জেরুসালেম থেকে কয়েকজন ফরিসি ও আলিম হযরত ইসা আ.র কাছে এসে বললেন, ২“বুজুর্গদের দেয়া যে-নিয়ম চলে আসছে, ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৫ ও ১৬

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৭ ও ১৮
রুকু ১৭ ১ছ’দিন পর হযরত ইসা আ. হযরত পিতর রা., হযরত ইয়াকুব রা. ও তার ভাই হযরত ইউহোন্না রা.কে সাথে ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৭ ও ১৮

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৯ ও ২০
রুকু ১৯ ১এসব কথা বলা শেষ করে হযরত ইসা আ. গালিল ছেড়ে জর্দান নদীর ওপারে ইহুদিয়ায় গেলেন। ২হাজার হাজার মানুষ ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ১৯ ও ২০

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২১ ও ২২
রুকু ২১ ১তারা জেরুসালেমের কাছে জৈতুন পাহাড়ের বৈতফগি গ্রামে এলে হযরত ইসা আ. তাঁর দু’জন হাওয়ারিকে এই বলে পাঠিয়ে দিলেন, ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২১ ও ২২

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২৩ ও ২৪
রুকু ২৩ ১অতঃপর হযরত ইসা আ. জনতা ও তাঁর সাহাবিদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ২“আলিম ও ফরিসিরা নিজেরাই হযরত মুসা আ.র ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২৩ ও ২৪

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২৫ ও ২৬
রুকু ২৫ ১তখন বেহেস্তি রাজ্য হবে এমন দশ কুমারীর মতো, যারা বরকে বরণ করার জন্য তাদের বাতি নিয়ে বাইরে গেলো। ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২৫ ও ২৬

/
মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২৭ ও ২৮
রুকু ২৭ ১ফজরের পরেই প্রধান ইমামেরা ও বুজুর্গরা একত্রে বসে হযরত ইসা আ.কে মেরে ফেলার বিষয়ে আলোচনা করলেন। ২তারা হযরত ...

মামলুকাতুল্লাহ: রুকু ২৭ ও ২৮

/